। অনেক কষ্ট করে ভিতর থেকে একটা গরম হাওয়া যেন ঠেলে বের হয়ে আসল দুজনের । এসময় ধুপ করে নেমে পড়ল বৃষ্টি । সাথে বয়ে চলল ভীষণ ঝড় । একেবারে গাছ পালা ভেঙে পড়ার মত দশা । অবস্থা বেগতিক দেখে তাইদৌড় লাগাল তারা । হাঁপাতে হাঁপাতে এসে উঠল চেয়ারম্যান বাড়িতে । কিন্তু রাত বেশি হওয়াতে ঘুমিয়ে পড়েছে সবাই । এখন কি করবে তারা ? সুরেষ জিজ্ঞেস করল । ফারুক কিছু না বলে তড়ি গড়ি করে এগিয়ে চলল কামলা বাচ্চুর ঘরের দিকে । চেয়ারম্যানের খাস চাকর সে । তবে ফারুকের সাথে বেশ খাতির রয়েছে তার । দরজার সামনে এসে এলোপাথারি থাপড়াতে থাকল কাঠের তৈরি দরজাটায় । কিন্তু বাইরের ঝড় বৃষ্টির কারণে কোন শব্দই পৌঁছুল না বাচ্চুর কানে । তার উপর কাচা ঘুম । এ ঘুম কি এত সহজে ভাঙে ! এভাবে কিছুক্ষণ ডাকার পর কোন সাঁড়া শব্দ নাপেয়ে জানলাটার কাছে গেল তারা । ধাক্কা দিতেই খট করে খুলে গেল সেটি। এবার বিদ্যুত চমকানির আলোয় স্পষ্ট দেখা গেল বাচ্চুর মুখখানি । এদিকে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে শরীর যেন একেবারে জমে গেছে । সুরেষটা ক্ষাণিক কাঁপতেও শুরু করে দিয়েছে । তাই আর দেরি না করে হাতের মুঠিতে কিছুটা পানি নিয়ে ফারুক ছুড়ে মারল বাচ্চুর দিকে । পানির স্যাঁতস্যাঁতে পরশ পেতেই আচমকা জেগে উঠল সে । উঠেই বিছানার দিকে তাকাল ও । কিন্তু অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছেনা । তাই হাতরে হাতরেঅবস্থা বুঝতে চাইল ও । একি ! আবারো বিছানায় পেশাব করে দিয়েছে সে? মনে মনে ভাবল হারান কবরেজটাকে ভাল করে টাইট দিতে হবে । বেটা , আমার সাথে বিটলামি ! ভেজাল অষুধ দেওয়া , না ! দুইদিনেই একশন শেষ !হঠাত্ বিদ্যুত্ চমকে উঠল আকাশে । জানলাটার দিকে চোখ পড়তেই আঁতকে উঠল বাচ্চু ! ওমা ! এ যে দুজোড়া চোখ ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে তারদিকে । ভয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে কাঁপতে কাঁপতে দোয়া দুরুদ পড়তে লাগল সে । এসময় ফারুকের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে আলগোছে উঠে বসল ও । কোনরকমে তাকাল জানলাটার দিকে । আকাশে অনবরত বিদ্যুত্ চমাকাচ্ছে বলে ফারুককে চিনতে বেশি সময় লাগলনা তার । তাড়াতাড়ি করে বন্ধ দরজাটা খুলে দিলে ফারুক আর সুরেষ ঘরে ঢুকল । এরপর দুজনকে দুটো শুকনো কাপড় আর একটা গামছা দিলে তা দিয়ে শরীরটা মুছে ভিজা কাপড়গুলোপাল্টে ফেলল তারা । ইতিমধ্যে বাচ্চু তার হারিকেনটাতে প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছে । – এবার বল , এতরাতে তোমরা কোথ্থেকে ? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল বাচ্চু ! – আর বলোনা ভাই ! কাজ সেরে স্টেশন থেকে ফিরছিলাম । কিন্তু চৌধুরীদের কলা বাগানটায় আসতেই কিসব কান্ড কারখানা ঘটতে লাগল ! সুরেষতো ভয়ে কাঠ ! আমিও কম ভয় পাইনি ! এরমধ্যে বৃষ্টি আর ঝড় শুরু হলে কোনরকমে দৌড়ে তোমার কাছে এলাম । বেশ করেছ , এখন শুয়ে পড়তো দেখি । সকাল হলে বাড়ি যেওক্ষণ । হারিকেনের প্রদীপটা নিভু নিভু করে শুয়ে পড়ল তারা । বাইরে তখনো ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে । বিদ্যুত্ চমকানির পাশাপাশি ক্ষণে ক্ষণে শোনা যাচ্ছে গুড়ুম গুড়ুম মেঘেদের চিত্কার । যাইহোক , ভোরের আলো ফুটতেই ফারুক আর সুরেষ বাচ্চুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দিল বাড়ির দিকে । চৌধুরীদের বাগানটার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাত্ মনে পড়ল গত রাতেরকথা । তাই কৌতূহল বশত বাগানে ঢুকল তারা । ঢুকে দেখল চৌধুরীর ক্ষত বিক্ষত লাস, পিলে চমকে গেল তাদের ! সুরেষতো দেখেই বিকট চিত্কার মেরে বসল । ফারুক কোন রকমে তার মুখ চেপে ধরে সেখান থেকে কেটে পড়ল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব । বাড়ি ফিরে দুজনেই নিম পাতা মেশানো গরম পানি দিয়ে গোসল সেরে নিল । কিন্তু আসল ঘটনা চেপে গেল সবার কাছে ।
নতুন নতুন াবব ভয়ংকর ভুতের গল্প পড়তে banglagolp2020.blogspot.com সাথেই থাকুন
0 comments:
Post a Comment