Sunday, July 8, 2018

জীবন ও বাস্তবতা



জীবনের বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর। এটাই জীবন। জীবনের বাস্তবতার বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যতই নিষ্ঠুর হউক বা যতই কষ্ট হউক তা সয়ে নিতে হয়, মেনে নিতে হয় জীবনের প্রয়োজনেই। জীবনে কষ্ট আসলে মানসিক ভাকে যতটুকু ভেঙ্গে পড়বে জীবন তার দ্বিগুন পিছিয়ে যাবে। জীবনের সকল দূঃখ কষ্ট ও বাস্তবতাকে জীবনের অংশ হিসাবে মেনে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করার নামই হচ্ছে সুখ। জীবনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে , সে কখনও এক পথে চলেনা। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলেনা।জীবনের এই বৈশিষ্ট্যকে যারা মেনে নিতে পারেনা তারাই হতাশ জীবন যাপন করে। যারা মেনে নিতে পারে তারাই সুখী । কিন্তু সবাই কি পারে সব অবস্থা মেনে নিতে ? কিন্তু মেনে নিতে হয় জীবনের জন্য। জীবনেরবাস্তবতা যারা মেনে নেয় তারা জীবনের আনন্দগুলো উপভোগ করে, জীবনকেউপভোগ করে। কষ্ট ও দুঃখগুলো থেকে তারা শিক্ষা নেয়। গৃহীত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে তারা জীবন সাজায়। ফলে তাদের জীবনের দুঃখ কষ্টগুলো বাহির থেকে দেখা যায়না বা তারা তা দেখাতে চায়না। দুঃখ কষ্ট তারা সামলে নিয়ে সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহন করে। তাদের সহনমাত্রা অনেক বেশী থাকায় একটা সময় এসে দুঃখ কষ্ট তাদেরকে ছুঁতে চায়না , ছুঁয় না। আমরা বলি চীরসূখী মানুষ । আসলে তা নয়। তারা দুঃখ কষ্টকে জীবনের অংশ হিসাবে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয়। তারা অনেক কষ্ট সয়ে , মেনে নিয়ে কষ্টকে জয় করে নিয়েছে। জীবনেরবাস্তবতায় আসা কষ্টকে মেনে না নিয়ে হতাশ হলেই জীবন হতাশ হয়। কিছু কিছু কষ্ট জীবনে আসে যা ক্ষুদ্র জীবনের কাছে পাহাড় তুল্য। হতাশ নয়, ধৈর্য্য ও সময়ই অনেক সমস্যার সমাধান দেয়। কষ্ট কখনও কখনও এমন ভাবে আসে যখন চোখ বন্ধ হয়ে যায়। কান বধির হয়ে যায়।কন্ঠ বোবা হয়ে যায়। বুদ্ধি নির্বোধ হয়ে যায়। শরীর পঙ্গু হয়ে যায়। দিশেহারা জীবনে সব পরিকল্পনা ছাড়খার হয়ে যায়। তারপরও মানুষকে বেঁচে থাকতে হয় জীবনের অদৃশ্য প্রয়োজনে। আমি জানিনা কী সে প্রয়োজন। জীবনের কোথায় যেন কিসের একটা অদৃশ্য টান।আমার অনুপস্থিতিতে সব চলবে যথারীতি। তারপরও মনে হয় আমিই যেন সব সমস্যা সমাধানের একমাত্র ভরষা। মনে হয়, আমি ছাড়া সমস্যা সমাধানের আর কেউ নাই। আমাকে ছাড়া ? অসম্ভব। এই মনে করে বলেই হয়তো হাজার যন্ত্রনা সয়ে বেঁচে থাকা। জীবনের অত্যাশিত বাস্তবতা কি যে কঠিন তা বোধ হয় মানুষ মাত্রই বুঝেন। আপনার মা আপনার এতই প্রিয় যে, এক মুহুর্ত চোখের আড়াল করেননি। কিন্ত একদিন হয়তো দেখা গেল আপনারই কোলে শুয়ে আপনার মা পৃথিবী থেকে বিদায় নিল। আপনি কি তা ভূলেও কোন দিন প্রত্যাশা করেছিলেন ? তারপরও কিন্ত স্বভাবিক ভাবে বেঁচে আছেন। থাকতে হবে , থাকতে হয়। আমার এক বন্ধুরকথা বলি। নাম অর্পি। বিবাহিত । মা হতে যাচ্ছে। স্বামী বিপ্লব চট্রগ্রামে চাকুরী করে বিধায় অর্পি এই অবস্থায় ঢাকার মিরপুরে বাবার বাসায় থাকেন। একদিন বিকালে হঠাৎ অর্পির বাবা ষ্টোক করে। হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেদিন অর্পি কে খুব পরিশ্রম করতে হয়েছে, কারণ অর্পির কোন ভাই নাই। সাড়ে সাত মাসের গর্ভবতী অর্পি সন্ধায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। ভর্তি হতে হয় মাতৃসদনে। ডাক্তার জানায়, জরুরী ভিত্তিতে সীজার না করলে মা ও সন্তান দুজনের জন্যই বিপদ হতে পারে। বিপ্লব কে সংবাদ দেয়া হয়। পরদিন ভোরে বিপ্লব ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে সংবাদ পায় অর্পির বাবা মারা গেছেন। দুপুরের পরে অর্পির সীজার হবে। বিপ্লব দিশেহারা হয়ে যায়,এখন সে কি করবে। কোথায় যাবে ? ভাইহীন অর্পির বাবার লাশ দেখতে হাসপাতালে ? নাকি নিজের স্ত্রী, সন্তানের কাছে। বিপ্লব গাড়ী থেকে নেমে চলে যায় লাশ সামলাতে। অর্পির বাবার লাশ দেখে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে বিপ্লব। কারণ মাত্র ১ মাস আগেই সে তার বাবাকে হারিয়েছে । নিজেকে সে অভিবাবকহীন, অসহায় ভাবছে। এক সময় তার বুকে ব্যথা উঠে এবং ঐ হাসপাতালেই ভর্তি করানো হয়। অর্পির বাবার লাশ বের করতে সময় লাগে অনেক বেশী, কারণ ভর্তির ১ ঘন্টা পর নার্স ট্রলিতে করে সামনে নিয়ে আসে বিপ্লবের লাশ। সীজার শেষে বিকাল নাগাদ অর্পি কিছুটা সুস্থ বোধ করে। দেখে পাশে তার সন্তান নাই। জানতে পারে ,অপরিপক্ক শিশু জন্ম হওয়ায় ইনকিবিউটরে রাখা হয়েছে। সন্ধায় পর নার্স এসে জানায় “ ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করেছিল,,,,,, কিন্তু ,,,,, দুঃখিত,,,,”। একই দিনে অর্পি তার তিনটি আশ্রয় হারায়। বাবা, স্বামী, সন্তান। আমাদের সমাজে নারীর বেঁচে থাকার এই তিনটিই স্থান। অর্পি বেঁচে আছে। থাকবে। বাহির থেকে কেউ কি বুঝবে এই বেঁচে থাকার ভিতরকার রূপটি কেমন। আমি জানিনা অর্পি কেমন করে বেঁচে আছে। কেন , কিসের আশায় বেঁেচে আছে। তবু তাকে বেঁচে থাকতে হবে কষ্টের স্মৃতি নিয়ে। প্রতি বছর একই দিনে অর্পি তিনটি কবর জিয়ারত করে যে কবরে প্রতিটি বাসিন্দা তার এক একটা আত্মা। অর্পি বেঁচে আছে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, এটাই হচ্ছে জীবন ও বাস্তবতা।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিল গেটসের জীবনের মজার কিছু কাহিনী


মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের জীবন কেটেছে নানা ঘটনার মধ্যদিয়ে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ না করেই মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্বের সেরা ধনী ব্যক্তির আসনে ওঠা এবং দানশীল হিসেবে খ্যাতিমান হয়েছেন তিনি। কিন্তু একসময়ের কঠোর ব্যবস্থাপক, দুর্দান্ত চিন্তক বিল গেটস কিন্তু খাবার শেষে নিজের প্লেট নিজে ধোয়ার মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পান। তাঁর জীবনে এমন কিছু মজার ঘটনা আছে, যা আনন্দদায়ক। বিভিন্ন বই, ওয়েব ও তাঁর সহকর্মীদের সাক্ষাৎকারে এসব মজার কাহিনি উঠে এসেছে। তাঁর জীবনের এই মজার ঘটনাগুলো নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিজনেস ইনসাইডার। সেখান থেকে কিছু ঘটনা তুলে ধরা হলো: দুষ্টু বিল গেটস কিশোর বিল গেটস কিন্তু একেবারেই শান্তশিষ্ট ছিলেন না। স্কুলে পড়ার সময় তাঁর পছন্দের সব মেয়েকে এক ক্লাসে আনার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। কিশোর বিল গেটসকে স্কুল কর্তৃপক্ষ কম্পিউটার ব্যবহার করে একটি ক্লাস শিডিউল তৈরি করে দিতে বলেছিল। এই সুযোগ কাজে লাগান তিনি। তাঁর পছন্দের সব মেয়েকে দিয়ে নিজের ক্লাস ভরান। হার্ভার্ডে পড়াশোনায় ফাঁকি হার্ভার্ডে পড়ার সময় যেসব কোর্সের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন, তার একটিতেও হাজিরা দেননি। এর পরিবর্তে তাঁর ভালো লাগত যেসব ক্লাস, সেখানে বসে যেতেন। তবে তাঁর মুখস্থবিদ্যা ছিল দুর্দান্ত। ফলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় তাঁকে আটকায় কে? ফলে ক্লাস না করেও সব সময় এ গ্রেড পাওয়া ছাত্র ছিলেন বিল গেটস। পড়াশোনা থোড়াই কেয়ার হার্ভার্ডে পড়ার সময় ২০ বছর বয়সী বিল গেটস ‘প্যানকেক সর্টিং’ নামের দীর্ঘদিনের এক গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে ফেলেন। তাঁর অধ্যাপক যখন ওই সমাধানটি একাডেমিক পেপারে প্রকাশের কথা বলেন, তখন বিল গেটস মাইক্রোসফট নিয়ে ঝুঁকে পড়েন। হার্ভার্ডের সাবেক অধ্যাপক ক্রিস্টোস পাপাডিমিত্র লিখেছেন, ‘দুই বছর পর যখন বিল গেটসকে ডেকে বলা হলো, তাঁর সমাধানটি গণিতের সাময়িকীতে প্রকাশের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। তখন তাঁর আগ্রহ দেখা যায়নি। সে নিউ মেক্সিকোর আলবুকার্কে মাইক্রোপ্রসেসরের মতো যন্ত্রের জন্য কোড লিখতে ছোট একটি কোম্পানি চালাতে আগ্রহী।’ ক্রিস্টোট লিখেছেন, এ রকম মেধাবী একজন ছেলে গোল্লায় যাচ্ছে বলে ভেবেছিলেন তিনি। গাড়ি চালানোর জন্য জরিমানা জোরে গাড়ি চালানোর জন্য একবার নয়—তিনবার, তা-ও একই পুলিশের কাছে দুইবার জরিমানা দেওয়ার নজির আছে বিল গেটসের। পোরশে ৯১১ গাড়ি চালিয়ে আলবুকার্ক থেকে সিয়াটলে ফেরার সময় তাঁকে জরিমানা করা হয়। আলবুকার্ক মরুভূমিতে সাধারণত খুব জোরে গাড়ি চালাতেন গেটস।একবার এক বন্ধুর কাছ থেকে পোরশে ৯২৮ মডেলের সুপারকার ধার করে এত জোরে চালিয়েছিলেন যে তা ভেঙে যায়। এক বছর লেগেছিল তা মেরামত করতে।গাড়ির নম্বরপ্লেট মনে রাখতেন তিনি মাইক্রোসফটের অফিসে কর্মীরা কখনআসছেন বা যাচ্ছেন, তা গাড়ির নম্বরপ্লেট দেখে মনে রাখতেন বিল গেটস।টেলিগ্রাফকে এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেছিলেন, ‘কর্মীরা কতটা কঠোর পরিশ্রম করছেন, তা যাচাই করতে আমার মান প্রয়োগের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হতো। আমি সবার নম্বরপ্লেট জানতাম। পার্কিংয়ে প্লেট দেখলেই বুঝতে পারতাম কে কখন আসছেন বা যাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠান বড় হয়ে যাওয়ার পর আমি এতে একটু শিথিল হই।’ গেমপোকা কম্পিউটারে গেম খেলা বিল গেটসের পছন্দ। কিন্তু তা একসময় নেশা হয়ে গিয়েছিল। মাইনসুইপার নামের গেমটির এতই ভক্ত ছিলেন যে তাঁর মনোযোগ ঠিক রাখতে গেমটি আনইনস্টল করতে হয়েছিল। একবার যখন এক কর্মী কম্পিউটার স্ক্রিপ্ট লিখে বিল গেটসের গেমের স্কোরকে হারিয়ে দেন, তখন গেটস বলেন, যন্ত্রযদি মানুষের চেয়ে দ্রুতগতিতে কাজ করে, আমরা কীভাবে মর্যাদা রাখব?ইকোনমি ক্লাসের যাত্রী ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বিল গেটস কোম্পানির সব লোক নিয়ে উড়োজাহাজের ইকোনমি ক্লাসে উঠেছেন। কোম্পানির রীতি ছিল সবকর্মীকে ইকোনমি ক্লাসে যেতে হবে। বিল গেটসও তা মেনে চলতেন। গেটসেরএক সহকর্মী লিখেছেন, ১৯৯০ সালে মাইক্রোসফটে যোগ দেওয়ার পর এক ব্যবসায়িক ভ্রমণে বিল গেটসের সঙ্গে তিনি ইকোনমি ক্লাসে গিয়েছিলেন।ওই সময় মাইক্রোসফট বড় প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বড় প্রতিষ্ঠানেরপ্রধান হয়েও কর্মীকে নিয়ে ইকোনমি ক্লাসে যেতে গেটসের মধ্যে কোনো অস্বস্তি দেখেননি তিনি। তিনি মাঝখানের সিটে বসেছিলেন। সারা পথ বই পড়তে পড়তে গিয়েছিলেন গেটস। পরে অবশ্য বিল গেটস নিজস্ব জেট বিমান কিনেছেন। কারিগরিতে ওস্তাদ বিল গেটসকে কারিগরি দিক থেকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয়। কোনো সফটওয়্যার তৈরির মাঝপথে তিনি বাগড়া দেন না। কিন্তু এক মিনিটের জন্যও তাঁকে বোকা বানানো সম্ভব নয়। কারণ, তিনিএকজন সত্যিকারের প্রোগ্রামার। স্বেচ্ছাসেবী খাবারের পর, বিশেষ করেরাতের খাবারের পর নিজের প্লেট নিজে ধুয়ে ফেলেন তিনি। তিনি বলেন, অন্যরা সাহায্য করতে চাইলেও নিজের কাজ নিজে করতে পছন্দ করেন তিনি।মজার মানুষ একবার এক সাক্ষাৎকারের সময় হুলুস্থুল কাণ্ড বাধিয়ে বসেন বিল গেটস। সাংবাদিককে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন তিনি। ওই সময় বাথরুমের গিয়ে নিজেকে আটকে রাখেন। যতক্ষণ পর্যন্ত সাংবাদিক ক্ষমা না চান, ততক্ষণ বাথরুমে বসে থাকার হুমকি দেন। তাতে কাজ হয়। মাইক্রোসফটের প্রতিবেদক ম্যারি জো ফলি এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান। ফলি বলেন, মজার একটি ঘটনা এটি। কমডেক্স নামের এক সম্মেলনেরসময় কয়েকজন সাংবাদিক মিলে গেটসের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন। ওই সময়কারবিখ্যাত সাংবাদিক জন ডজ খেপিয়ে দেন বিল গেটসকে। অবশ্য তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়ার ধরন ছিল অন্যদের চেয়ে আলাদা। তিনি বিল গেটসকে ‘বাজারের সংজ্ঞা কী’ জাতীয় প্রশ্ন করেন। এতে বিল খেপে যান এবং উঠেগিয়ে বাথরুমে যান এবং নিজেকে আটকে রাখেন। বলেন, জন ক্ষমা না চাইলেআর বেরোবেন না। জন তখন বাথরুমের দরজার সামনে গিয়ে বলেন, ‘আই অ্যাম সরি।’

মাশরাফি বিন মুর্তজার জীবনের গল্প



বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক অন্যতম তারকার নাম মাশরাফি বিন মুর্তজা। দেশের জন্য লড়তে গিয়ে যার পায়ে করা হয়েছে বার বার অস্রপ্রসার, তাওএকবার দুইবার নয় সাত সাতবার। যার যোগ্য নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্ব দরবারে মাথা তুলে দাড়িয়েছে। সেই মাশরাফি বিন মুর্তজার কিছু অজানা কথা আপনাদের জানাবো . বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা নড়াইলে ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নানাবাড়ীতে মাশরাফির জন্ম। তার ডাক নাম ‘কৌশিক’বাবার নাম গোলাম মর্তুজা এবং মার নাম হামিদা বেগম,, ছোটবেলা থেকেই তিনি বাঁধাধরা পড়াশোনার পরিবর্তে খেলাধুলা নিয়ে পড়ে থাকতেন, আর মাঝে মধ্যে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটা।ছোটবেলা থেকে নানা বাড়িতে বড় হন মাশরাফি। সব সময় মামা-মামি তাকে আগলে রাখতেন। ম্যাশ যখন ঢাকায় আসেন, তখন তিনি উঠেছিলেন চাচা চাচীর বাসায়। এরপরই তো আজকের মাশরাফি হয়ে ওঠা। যে কারণে তাদেরকে কোনদিন ভুলতে পারবেন না তিনি। বাইকপ্রিয় মর্তুজাকে সবাই খুব হাসিখুশি আর উদারচেতা মানুষ হিসেবেই জানে। প্রায়ই তিনি বাইক নিয়ে স্থানীয় ব্রিজের এপার-ওপার চক্কর মেরে আসেন। নিজের শহরে তিনি প্রচণ্ড রকমের জনপ্রিয়। এখানে তাকে "প্রিন্স অব হার্টস" বলা হয়। বিবাহ; এ শহরেরই সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়ার সময় সুমনা হক সুমির সাথে তার পরিচয় হয়। দু'জনে ২০০৬ সালে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তিনি দুই সন্তানের জনক, ছেলে সাহেল ও মেয়ে হুমায়রা ক্রিকেটে অভিষেক ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০০১ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজেই অভিষেক হয় তার, ৮ নভেম্বর টেস্ট অভিষেক ম্যাচে ১০৬ রানে ৪টি উইকেট নিয়েছিলেন এর পর ২৩ নভেম্বর ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচে ৮ ওভার ২ বলে ২৬ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট এবং T20 অভিষেক ২৮ নভেম্বর ২০০৬ অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির রেকর্ড ম্যাচের সংখ্যা জয়পরাজয় ড্র টেস্ট ১ ১ ০ ০ ওডিআই 37 ২৩ ১৪ –0 টি২০আই ২৬ ৯ ১৬–0 মাশরাফির সপ্ন বাংলাদেশের রঙিন পোশাকের অধিনায়কের এখন একটাইস্বপ্ন ছেলে-মেয়েকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। এছাড়া দেশের হয়ে যতদিন সম্ভব খেলে যেতে চান তিনি। আরো অনেক সাফল্য এনে দিতে চান লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।

যে গল্পের নাম ছিল না


২০০৮ সাল… ঢাকায় আসি ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য । পরীক্ষা দেইএকটা Public uni তে… সেখানে পরিচয় হয় এক বড় ভাইএর সাথে…উনি আমাকে একটা ভর্তির জন্য গাইড বই দেয়…আর একটা কার্ড এর পিছনে তার সেল নাম্বার লিখে দেয়…প্রয়োজনে ফোন করার জন্য…পরীক্ষা দেই কিন্তু চান্স হয় না সেটা জানিও ওই ভাইয়ার মাধ্যমে…এর পর আর কথা হয় নি অনেক দিন… একদিন হোস্টেলে পাশের রুমে বসে আড্ডা শেষে রুমে এসে দেখি আমার ফোনে ওই ভাইয়ার মিসড কল…কল ব্যাক করি…উনি ফোন ধরে বলে যে ভুলে কল চলে গেছে….তবুও আমাদের কথা হয়…এই আমাদের বন্ধুত্ব শুরু….বেশ কয়েক দিন আমাদের টানা কথা হয়…তারপর একদিন দেখা করব বলে ঠিক করি….এতো দিনে আমাদের বন্ধুত্ব “ভাইয়া” থেকে “নাম” আর “আপনি” থেকে “তুমি”তে নামে… অনেক দিন পরের ঘটনা বলে এতো বেশি তার চেহারা আমার মনে ছিলো না….তাই দেখেই মনে মনে বললাম “ইস্ এতো কালো একটা ছেলের সাথে এতোদিন কথা বলছি???” তবুও কথা বললাম… কিন্তু তার সম্পর্কে পুরো ধারনাই বদলে গেলো আমার….এতো ভালো একটা ছেলে….প্রথম দেখায় কোন শালীনতার অভাব ছিল না….এভাবেই কেটে যায় ৩০ মিনিটের মতো…. এবার থেকে শুরু হলো রাতে দিনে কথা বলা….একজন বন্ধু এতো ভালো হয় কি করে তখন আসলেই বুঝতাম না….হিসেব কম মিলানোর চেস্টা করিনি….তবুও পারিনি… যাই হোক আমরা এরপর প্রতিদিন হাটতাম ফার্মগেটের জাহানারা গার্ডেনের রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা….দেড় টা মাসের এমন কোন দিন ছিলো না যেদিন আমরা হাটিনি একসাথে…. কোন একদিন আমাদের দেখে ফেলেছিলো আমার এক বড় ভাই…গুব্লেট টা সেই বাধায়….বাড়ি বলে দেয়…আমারতো তখন অবস্থা “ঈশ্বর আমাকে উঠাইয়া নাও,নয়তো দড়ি ফেলাও…একা একা উঠে যাই…”..খুব কষ্টে বাড়ি বুঝিয়েছিলাম যে সে শুধু আমার বন্ধু… একদিন হাটতে হাটতে তার পাগলামির মাত্রা এতো টা উপরে উঠে গিয়েছিলো যে আমি তাকে বলতে বাধ্য হলাম.. “এই তুমিকি আমাকে ভালোবাসো???”…..সে আমার দিকে পেছন ফিরে উল্টা ঘুরে আমাকে বলল“হুমম বাসি..” আবার সাথে সাথে আমার দিকে ফিরে বলল না না মজা করছিলাম….কিন্তু এতো দিনে আমি তার চোখের ভাষা পড়তে শিখে গেছি যে….বুঝলাম আজ কিছু বুঝি হয়ে গেলো আমার….. আমি যেনো আরো Dependable হয়ে গেলাম তার প্রতি…সেই কালো ছেলেটার প্রতি…কবে তাকে ভালোবেসেছিলাম জানি না….তবে এটা জানি আজ আমাদের ভালোবাসার ২ বছর ৭ মাস চলছে….আজ আমরা আছি কিছু সুখ, কিছুদুঃখ, স্বপ্ন দেখা আর কিছু আবদার মেটানোর মধ্যে….আর অমার বাড়িতে যেখানে ওকে দেখা হতো আমার শত্রু হিসেবে….সেই বাড়ির লোকজন ই জানে আমার একটাই মাত্র বন্ধু এই পৃথীবিতে….. কতো কথা বলে ফেললাম একটা কথা বলি এখন আমরা কেউ ই জানি না আমাদের এই ভালোবাসার শেষ কোথায়…..আমাদের ধর্ম টাই যে আলাদা……..!!! তারপরও কেনো যেনো তাকেই ভালোবাসি……..শুধুই তাকে……

জীবনের গল্প (হত্যাকারী)

ভালোবাসার অনুভূতি কখনো বলে কয়ে আসেনা। কে কখন কার ভালোবাসার রংে নিজেকে রাংাবে সেটা সে নিজেও জানেনা। তখন ক্লাস নাইনে পড়তাম। একদিন স্কুলে গিয়ে শুনলাম সোহা নামে আমাদের সাথে যে মেয়েটি পড়তো সে নাকি উৎপল রায় নামের এক হিন্দু ছেলের হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছে। কথাটা শুনে অবাক হয়েছিলাম। কারণ, এতোদিন দেখেছি হিন্দু মেয়েরা মুসলমান ছেলেদের সংে বাড়ি ছাড়ে কিন্তু সেবারই প্রথম দেখলামমুসলমান মেয়েরাও হিন্দু ছেলেদের ভালোবাসা পেতে পরিবারের অন্য সদস্যদের অভিশাপ কুড়ায়। তাছাড়া রক্ষণশীল মুসলমান পরিবারের মেয়ে ছিল সোহা। পরিবারের কড়া শাসন আর নিয়মনীতি মেনে চলতে হতো তাকে। ক্লাস সিক্স থেকেই দেখেছিলাম বোরখা পড়ে আসতে। কোনোদিন ওর মুখ দেখতে পাইনি আমরা। ওর মুখ দেখার ব্যাপারে ছেলেদের মধ্যে চাপা কৌতূহল ছিল। তারপরেও রক্ষণশীল পরিবারের পরদাকে ভেদ করে ভালোবাসা চুপিচুপি প্রবেশ করেছিল সোহার হৃদয়ে। আর হিন্দু ছেলের সাথে মেয়ের সম্পর্ক সোহার বাবা-মা মেনে নেয়নি। তাই পুরনো সব বন্ধন ছিন্ন করে সোহা জুড়ে নেয় নতুন সংযোগ। স্কুল থেকে বন্ধুরা যাচ্ছিল সোহা-উৎপলের সংসার দেখতে। তাদের সাথে আমিও গেলাম। প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে পৌছালাম উৎপল রায়ের বাড়িতে। বেশ বড় পাকা বাড়ি। আসবাবপত্রেরও অভাব ছিল না। বাড়িতে সোহা আর উৎপল ছাড়া কেউ ছিল না। উৎপলের বাবা-মা গত হয়েছেন কয়েক বছর আগেই। বোরখা পরে স্কুলে যেত বলে কোনোদিন সোহার মুখ দেখতে পেতাম না। সেইদিন দেখলাম।দেখে চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। দেখতে একদম সাক্ষাৎ পরীদের রাণী। এমন একটা মুখ পেলে বাবা-মার শাসন উপেক্ষা করে, রাজপ্রাসাদ ছেড়ে যেকোনো রাজপুত্রও অনায়াসে তাকে বিয়ে করতো। আমরা কিছুক্ষণ সেখানে থেকে সোহা-উৎপলের সুন্দর জীবন কামনা করে যার যার বাড়ি ফিরে গেলাম।ক্লাস নাইন পেরিয়ে কখন যে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে উঠলাম কিছুই বুঝতেপারলাম না। ডিসেম্বরের শেষের দিক। শীতকালীন ছুটি কাটাতে বাড়ি গেলাম। একদিন সন্ধ্যে বেলা এক বন্ধুকে নিয়ে হাটছিলাম। বন্ধুই আমাকে জানালো পাশের গ্রামের একটি লোকের কথা। যে নাকি জুয়া খেলে সবকিছু হারিয়ে সর্বশেষ বাজি ধরেছে নিজের বৌকে। সন্ধ্যার পর লোকটারবাড়িতে বসবে জুয়ার আসর। ব্যাপারটা খুব গোপনীয়, আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হলো। তাই বন্ধুকে নিয়ে কৌতূহল মেটাতে ছুটলাম সেইজুয়াড়ির বাড়িতে। আমাদের যেতে দেরী হয়েছিল। খেলা প্রায় শেষের দিকে।দর্শক আমাদের সহ পাঁচজন। অর্থাৎ, খেলাটা গোপনেই হচ্ছিল। বৌ বাজি ধরা লোকটা আর ঐ বাড়িটাকে আমার খুব চেনা চেনা লাগছিল। যথাসময়ে খেলাশেষ হলো। বাজিধরা লোকটা হেরে গেল। বিজয়ীরা পুরষ্কার চাইলো। লোকটা তার বৌকে আনতে বাড়ির ভেতরে গেল। বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেল। লোকটা আসছিল না দেখে আমি আর আমার বন্ধু বাদে সবাই বাড়ির ভেতরে ঢুকলো। হঠাৎ তারা চিৎকার দিয়ে যে যার মতো ছুটে পালালো। কৌতূহলী হয়ে ভেতরেঢুকলাম এবং যা দেখলাম তাতে দুজনই বিস্মিত হলাম। বৌ বাজিধরা লোকটারশরীর ও মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিল। আর পাশেই দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে পা ছড়িয়ে বসে একটি মেয়ে কাঁদছিল। ডান হাতের কাছে একটি রক্তমাখা ধারালো দা ফেলা। মেয়েটিকে চিনতে অসুবিধা হলোনা। মেয়েটা ছিল উৎপল রায়ের হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে পালানো আমার সেই বান্ধবী সোহা। উৎপলকে আগে চিনতে পারিনি। কারণ, ওর মুখ দাড়ি, গোফে ভরা ছিল। তাছাড়া, নেশা করে ওর চেহারা নষ্ট হয়ে গেছে। পুরো বিষয়টা আমার কাছেপরিস্কার হলো। তবে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম। একটু পরেই পুলিশ এলো। বুঝতে পারলাম পালিয়ে যাওয়া লোকগুলো পুলিশে খবর দিয়েছে।একটা পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, কে খুন করেছে? সংে সংে সোহা ক্ষিপ্রগতিতে বললো, "ওকে কি জিজ্ঞেস করছেন? আমি খুনি, খুন আমি করেছি, আমাকে ধরে নিয়ে যান। অনেক ভালোবেসেছিলাম ওকে। যার কোনো মূল্য দেয়া তো দূরে থাক, পায়ের নিচে পিষে খুন করেছে।আজ তার শোধ নিলাম।" সোহাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে গেল পুলিশ। কেবল তাকিয়ে দেখলাম।কারণ, এটাতো স্বাভাবিক বিষয়। খুন করলে তো জেলে যেতেই হবে। তাছাড়া,জানতাম এদেশে ভালোবাসা হত্যা করলে কোনো দোষ হয়না কিন্তু ভালোবাসারহত্যাকারীকে হত্যা করলে হাতকড়া পরানোর লোকের অভাব হয় না।"Someone, Somewhere is waiting for you" But, you have to find out the right person and stay a long away from cheater.
অাপনাদের সাথে ঘটে যাওয়া যেকোনো গল্প অামাদেী মাধ্যমো শেয়াী করতে অামাদের ফেসবুক পেজ এ মেসেজ দিন।


জীবনের গল্প (অনিল ছোয়া)

চারিদিক নিস্তব্ধ। পশ্চিম আকাশে সূর্য হেলে গেছে। গৌধুলির লাল আভার বিকিরণ হচ্ছে নদীর ঢেউ এ। . আর অনিলের চোখের অশ্রুফোটা নদীতেপড়ছে ব্রীজের উপর থেকে।তাতে ক্ষুদ্র তরঙ্গের সৃষ্টি হচ্ছে নদীর ঢেউ এর সাথে।কিন্তু সেই ক্ষুদ্র ঢেউ নদীর ঢেউয়ের কাছে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঠিক এভাই ছোয়ার জীবন থেকে বিলীন হয়ে গেছে অনিল।কত স্বপ্ন সাজিয়ে রেখেছিল অনিল ছোয়াকে ভালো রাখার জন্য।কত আশার প্রদীপ জ্বলেছিল।কিন্তু সবকিছু থেকে এখন কেবলই ধোয়া উঠছে। . কারন হলো এখনো কোনচাকরি হলো না অনিলের ।অনিল চাকরির জন্য হন্নে হয়ে বেড়িয়েছে এই দুইটা বছর কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরি হলো না।আজকেও একটা কোম্পানি থেকে ফোন করার কথা কিন্তু করে নি।করলে হয়তো ছোয়ার বিয়েটা আটকানো যেতো কিন্তু শেষ চেষ্টাটাও করতে পারলো না অনিল। নিজেকে খুব ব্যর্থমনে হচ্ছে।জিবনটাকে অর্থহীন লাগছে, চরম হতাশায় ডুবে গেছে অনিল।ভালোবাসাটা কি চাকরির সমানুপাতিক আর অর্থের ব্যস্তানুপাতিক। সেখানে ছলনা শব্দটা ধ্রুবক হলে সমানের ওপাশে ছোয়ার নামটা সহজেই বসানো যাবে।কত সহজে চলে গেল ছোয়া। এসব ভাবতে ভাবতে ফুটপাতের ধারে হেটে চলছে অনিল।কিছুটা আনমনে হয়ে পা চালাচ্ছে।এমন সময় মাথার উপর বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা ঘটেছে সেদিকে খেয়াল নেই অনিলের । এমন সময় ধাক্কা দিয়ে কেউ সরিয়ে দেয় অনিলকে।তাকাতেই দেখে একটা মেয়ে। নাম মিম সেখান থেকেই মিমের সাথে পরিচয় হয় অনিলের। . অনিলকে চাকরি পাওয়ায় সহায়তা মিম।আস্তে আস্তে সম্পর্কের স্পর্শ টের পাায় দুজন। ,৫ বছর পর, আজ অনিল আর মিম এর ৩য় বিবাহ বার্ষিকী। অনিল দূর থেকে তার স্ত্রীকে লক্ষ্য করছে কত সুন্দর লাগছে তার বউটাকে। কত নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে ফেলেছে মিম তাকে। , আজ ছোয়ার কথা মনে পড়েকিছুটা বাকা হাসি আসে অনিলের ঠোটের কোণে।আর মনে মনে ধন্যবাদ দেয় ছোয়াকে।ছোয়া চলে না গেলে হয়ত এমন দিন অনিলের জিবনে আসতো কি না সেটা কল্পনাতীত।



গল্পটি লিখেছেনঃ
হাফিজ অাব্দুর রহমান

অাপনাদের জীবনের গল্প শেয়ার করতে অামাদের ফেসবুক পেজ এ মেসেজ করুন।




banglablog2020.blogspot.com

****অহংকারী মোরগ ***

এক ছিল চাষি।চাষির ছিল একটি খামার।খামারে অনেক রকম মুরগি ছিল।তার মধ্যে একটা লাল রঙ্গের মোরগ ছিল।আর বাকি সব মুরগির রং ছিল সাদা।লাল রঙ্গের মোরগ টাকে চাষি খুবই ভালোবাসত।এজন্য তার ছিল অনেকঅহংকার।বাকি সব মুরগি তার সাথে ঘুরতে চাইলে,লাল মোরগ বলত আমি তোমাদের সাথে খেলব না।কারণ তোমাদের দেখতে ভালো না।এভাবে অন্য মুরগির সাথে লাল মোরগ কথা বলত।কিন্তু একদিন সে খামারে একটা চোর ডুকে পড়ে।মুরগি চুরি করার জন্য।কিন্তু চোর ভাবতে পারছে না যে সে কোন মুরগিটাকে নেবে।অবশেষে সে লাল মোরগ টাকে দেখতে পেল।তার পর সে লাল মোরগ টাকে নিয়ে চলে গেল।পরে অন্য সব মুরগি বলে উঠল যে আমাদের কে আজ আমাদের পালক গুলো বাঁচাল।এ থেকে আমরা শিখলাম যে অহংকার করা ভালো নয়।অহংকার পতনের মুল।

শেয়াল ও বাঘের এক মজার কাহিনী

ঠোট্ট একটা শহর। সেখানে সবচাইতে বড় ডাক্তার হইয়া পড়িল এক নাপিত। ছোটখাট অসুখে এটা ও্টা ঔষধ দিয়াই নয়, ফোঁড়া কাটা হইতে আরম্ভ করিয়ারোগীর পেট চিরিয়া রোগীর পেট চিরিয়া পেট হইতে পুঁজ বাহির করিয়া দেওয়া পর্যন্ত বড় বড় কাটাছেঁড়ার কাজও সে অতি সহজেই করিয়া দেয়। এসবকাজ করিতে ডাক্তারেরা কত রকমের যন্ত্র লয়। ছুরি, কাঁচি ভালোমত গরমপানিতে সিদ্ধ করিয়া, পানিতে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করিয়া কত সাবধান হইয়া তাহারা রোগীর গায়ে অস্ত্র ধরে। নাপিত কিন্তু সবের ধারধারে না। সে হাতের তোলায় তাহার ক্ষুর আর নরুণ ভালোমত ঘষিয়া খসাখস বড় বড় কাটাছেঁড়ার কাজ করিয়া যায়। এমন পাকা তাহার হাত: রোগীর পেট চিরিয়া, পেটের মধ্যে হাত দিয়া, সেখানে নাড়ির ভিতরে ফোঁড়াটি হইয়াছে, অতি সহজেই সেখানে ক্ষুর চালাইয়া পুঁজরক্ত বাহির করিয়া আনে। তারপর সাধারন সুঁই সুতা দিয়া ক্ষতস্থান সেলাই করিয়া, আর এবটুহলুদ গুঁড়া মাখাইয়া দেয়। ক্ষতস্থান সারিয়া যায়। চোখের পলক ফেলিতে না ফেলিতে সে বড় বড় কাটাছেঁড়ার কাজ করিয়া ফেলে। কাহারও ফোঁড়া হইয়াছে, বেদনায় চিৎকার করিতেছে। দেখি, দেখি বলিয়া নাপিত সেখানে তার ক্ষুর চালাইয়া দিয়া পুঁজরক্ত বাহির করিয়া আনে। রোগী আরাম পাইয়া আনন্দের হাসি হাসে। গলায় মাছের কাঁটা ফুটিয়াছে, দুষ্ট ছেলে খেলিতে খেলিতে মারবেল-গুলি কানের মধ্যে ঢুকাইয়া দিয়াছে, আর খুলিতেপারে না। নাপিত নরুনের আগা দিয়া গলার ভিতর হইতে মাছের কাঁটা বাহিরকরিয়া আনে, কানের ভিতরে নরুনের আগা ঢুকাইয়া দিয়া মারবেল বাহির করিয়া আনে। শুধু কি তাই? পিঠে ফোঁড়া হইলে তাকে বলে কারবঙ্কল। বড় বড় ডাক্তার সেটা কাটিতে হিমশিম খাইয়া যায়। চোখের পলক ফেলিতে ফেলিতে নাপিত সেখানে ক্ষুর চালাইয়া দেয়। এসব কাটাকুটিতে সব রোগীই কি ভাল হয়? কোনটা ভাল হয়– কোনটা পাকিয়া বিষ লাগিয়া ফুলিয়া মরে।তা এরূপ ত ডাক্তারের বেলায়ও হয়। তাদের হাতেই কি সব রোগী ভাল হয়? শহরের সব লোক তাই অসুখে বিসুখে নাপিতকেই ডাকে। ডাক্তার ডাকিলে এত টাকা দাও–অত টাকা দাও, তারপর ঔষধের দাম দাও। কত রকমের ঝামেলা। নাপিতের কাছে ভিজিটের কোন দাম-দস্তুর নাই। দুই আনা, চার আনা যার যাহা খুশি দাও। ঔষধ ত তার মুখে মুখে–গরম পানির সেক, হলুদের গুড়োর প্রলেপ, পেটে অসুখ করলে আদা নুন খাও, তাতে না সারিলে জইনের গুঁড়া চিবাও, জ্বর হইলে তুলসীর পাতা, নিউমোনিয়া হইলে আকনের পাতার সেক। এসব ঔষধ বনে জঙ্গলে, পথে ঘাটে যেখানে-সেখানে মেরে। তাই সকলেইনাপিতকে দিয়ে চিকিৎসা করায়। শহরের আর আর সব পাশ করা ডাক্তারেরা রোগীর অভাবে ভাতে মরে। নাপিতের মেয়েছেলে দুধে ভাতে খাইয়া নাদুসনুদুস। একদিন সব ডাক্তার একত্রিত হইয়া ভাবিতে বসিল, কি করিয়াতাদের পসার ফিরাইয়া আনা যায়। এক ডাক্তার বলে, “দখে ভাই। আগে আমার বাড়িতে রোজ সকালে শত শত রোগী আসিয়া গড়াগড়ি দিত। টাকা-পয়সা তো দিতই, সেই সঙ্গে রোগ সারিলে কলাটা মূলটা, যে দিনের যে, তাও দিয়া যাইত। এই যে আমের মওসুম। আমার ছেলেমেয়েরা একটা আমও মুখে দিযে দেখিল না! আর নাপিতের বাড়ি দেখ গিয়ে… আর এক ডাক্তার বলে,“আরে ভাই! ছাড়িয়া দাও তোমার আম খাওয়া। রোগীপত্তর আসে না। টাকা-পয়সার অভাবে এবার ভাবিয়াছি, ঔষধ মাপার পালা-পাথর, আর বুক দেখার টেথিস্কোপটা বেচিয়া ফেলিব।” অপর ডাক্তার উঠিয়া বলে, “তুমি ত এখনওবেচ নাই। এই দুর্দিনের বাজারে চাউলের যা দাম! ডাক্তারি যন্ত্রপাতিত কবেই বেচিয়া খাইয়াছি। এবার মাথার উপরে টিনের চালা কয়খানা আছে। তাও বেচিবার লোক খুঁজিতেছি।” ওপাশের ডাক্তার বলে, “ভায়া, হে, এসবদুঃখের কথা আর বলিয়া কি হইবে, দেখিতেছ না? আমাদের সকলের অবস্থাই ওই একই রকম। এখন কি করা যায় তাই ভাবিয়া বাহির কর।” অার এক ডাক্তার বলে, “দেখ ভাই! বিপদে পড়লে বুড়ো লোকের পরামর্শ লইতে হয়। শহরের মধ্যে যে বুড়ো ডাক্তার আছেন, বয়স হইয়াছে বলিয়া এখন রোগী দেখেন না। তিনি আমাদের সকলের ওস্তাদ। চল যাই, তাঁহার নিকটে যাইয়া একটা বুদ্ধি চাই; কি করিয়া আমাদের পূর্বের পসার বজায় রাখিতে পারি।” তখন সকলে মিলিয়া সেই বুড়ো ডাক্তারের কাছে যাইয়া উপস্থিত হইল। বুড়ো ডাক্তার আগাগোড়া সমস্ত শুনিয়া বলিলেন, “তোমরা কেহ সেই নাপিতকে আমার নিকট ডাকিয়া আন।” নাপিত আসিলে বুড়ো ডাক্তার তাহাকে বলিলেন, “দেখ এইসব ছোকরা ডাক্তারের কাছে শুনিতে পাইলাম, তোমার কাটাছেঁড়ার হাত পাকা। তুমি একটা কাজ কর। আমাদের নিকট হইতে শারীরবিদ্যাটা শিখিয়া লও। তাতে করিয়া তোমার ডাক্তারি বিদ্যাটা আরওপাকিবে।” নাপিত বলিল, “এ অতি উত্তম কথা। আমি ত মুখ্যুসুখ্যু মানুষ। আপনারা যদি কিছু শিখাইয়া দেন বড়ই উপকার হইবে।” তখন সকল ডাক্তার মিলিয়া নাপিতকে শারীরবিদ্যা মিখাইতে লাগিল। শরীরের এখান দিয়া এই নাড়ি প্রবাহিত হয়। এইটা শিরা, এইটা উপশিরা। এইখানে ধমনী। এইখানে লিভার। হাতের এইখানে এই শিরা। কাটিলে রক্ত বন্ধ হইবে না, লোক মরিয়া যাইবে। এইখানে হৃৎপিন্ড। এইভাবে সত আট দিন ধরিয়া সব ডাক্তার মিলিয়া নাপিতকে শারীরবিদ্যা শিখাইতে লাগিল।নাপিত বুদ্ধিমান লোক। ডাক্তাদের যাহা শিখিতে মাসের পর মাস লাগিয়াছিল, সেতাহা সাত দিনে শিখিয়া ফেলিল। শুধু কি শারীরবিদ্যা? ডাক্তারেরা তাহাকে নানারকম অসুখের জীবাণুর কথাও বলিয়া দিল। ডাক্তারি যন্ত্রপাতি ভালোভঅবে পরিষ্কার করিয়া না লইলে রোগীর কি কি রোগ হইতেপারে তাহাও বুঝাইয়া দিল। তারপর সেই বুড়ো ডাক্তারের পরামর্শমতো সকলডাক্তার একটি রোগী আনিয়া নাপিতের সামনে খাড়া করিল। তাহার সামান্য ফোঁড়া হইয়াছিল। তাহারা তাকে সেই ফোঁড়া কাটিতে বলিল। নাপিত কতরকম করিয়া হাতধোয়। কত ঔষধ গোলাইয়া তার ক্ষুর-নরুন পরিষ্কার করে, কিন্তু তার মনের খুঁতখূঁতি যায় না। হয়তো তার হাত ভালোভাবে পরিষ্কার হয় নাই। হয়তো অস্ত্রে কোন রোগের জীবাণু লাগিয়া আছে। আবারনতুন করিয়া অস্ত্র সাফ করিয়া নাপিত সেই লোকটির ফোঁড়া কাটিতে আরম্ভকরিল, কিন্তু তার হাত যে আজ কাঁপিয়া ওঠে। শরীরের এইখানে এই শিরা এইখানে উপশিরা। ওইখান দিয়ে ক্ষুর চালাইলে রোগী মারা যাইবে; নাপিত ক্ষুর এভাবে ধরে, ওভাবে ধরে, কিন্তু ফোঁড়া কাটিতে কিছুতেই সাহস পায় না। এতদিন অজানাতে রোগীর গায়ের যেখানে সেখানে ক্ষুর চালাইয়াছে। কিন্তু সমস্ত জানিয়া শুনিয়া সে আজ রোগীর গায়ে ক্ষুর চালাইতে সাহস পায় না। ভয়ে তাহার হাত হইতে অস্ত্র খসিয়া পড়িয়া গেল।নাপিত আর তাহার ক্ষুর চালাইতে পারিল না। সেই হইতে নাপিতের পসার বন্ধ হইল। লোকেরা আবার ডাক্তার ডাকিতে আরম্ভ করিল।

রুপকথার গল্প(বাঘের ফাসি)

অনেক দিন আগের কথা। রুপকথার রাজ্যের গহীন জঙ্গলে থাকতো দুই মামা ভাগনে । মামা হলো শিয়াল, ভাগনে হলো বাঘ। দুই মামা ভাগনে অনেক দিন যাবত সেই জঙ্গল থেকে কোনো শিকার ধরতে পারেনি । তাই তারা ভিসন ক্ষুদায় কাতর।এক দিন তারা সিদ্ধান্ত নিলো তারা আর এই জঙ্গলে থাকবেনা।এই বলে শিয়াল মামা ওবাঘ ভাগনে অজানা পথে খাবারের উদেশ্য হাটতে শুরু করল। হাটতে ,হাটতে তারা একটা নদী কাছে এসে পৌছে।শিয়ালওবাঘ ক্ষুদ্ধায় ক্লান্ত হয়ে পরে। হঠাৎ শিয়াল মামা দেখতেপায় নদীর ঐ পারে আনেক খাবার পরে আছে । কিন্তু নদী পার হবার মতো শক্তি ছিলনা। কিন্তু অনেক খাবারের লোভে কষ্ট করে, কোনো রকমে নদী পার হয়।তার পর মনের আনন্দে খাবার খেতে শুরু করে।ইতিমধ্যে এক হঁরিণএসে বলল তোমাদের আগে কখনো এই রজ্যে দেখিনি।তোমরাকি বানোর রাজ্যের আইন জানো? বানোর রাজ্যের আইন হলো এক সপ্তাহ পর যার গলার সাথে ফসির মাপ মিলে যাবে তাকে ফাসি দেওয়া হয়।হরিণের কথা শুনে শিয়াল অল্প খেলো। আর বাঘ খেতেই থাকল। এক সপ্তাহ পরে বানোর রাজ সবাইকে ফাসির মঞ্ছের কাছে জরো করে এক এক করে সবারগলার সাথে ফাসির দরির মাপ করলয়। কিন্তু করোও গলার সাথে মিলনা ।সবার পর বাঘের গলায় ফাসিরদরি মিলে যায়।এবার আইন অনুশারে বাঘের ফাসিহবে।এখন বঘ শিয়ালকে বলে মামা আমাকে বাচাও।শিয়াল বাঘ ভাগনে চিন্তা করনা আমি তোমাকে বাচাব। আমি যা বলবো,ফসির মঞ্ছে তুমি তা বলবে।বলবে যে আমাকে ফাসি দাও,আমাকে ফাসি দাও। কথা মতো বাঘ ফসির মঞ্ছে উঠে বলতে লগলো আমাকে ফাসি দাও ,আমাকে ফাসি দাও এ কথা শুনে বানোর অবাক হয়ে শিয়াল কে জিঙ্গাসা করল বঘ কেন নিজের থেকেই ফাসি কথা বলছে।শিয়াল বানোর কে বলে আজ যার ফাসি হবে সে স্বমস্ত রুপকথা রাজ্যের রাজ হবে। এই কথা শুনে বানোর নিজেই নিজেকে ফাসি দায়। আর বাঘ বেচে যায়।রাজা হিসাবে শিয়াল রাজ্যত্ব শুরুকরে।

রুপকথার গল্প(পান্তা বুড়ি)

পান্তা বুড়ির গল্প
অনেক দিন আগের কথা ।এক গ্রামে থাকতো এক পান্তা বুড়ি। বুড়ির খুব দুঃখ ছিল । কারন * প্রতি দিন চোরে এসে বুড়ির পান্তা খেয়ে যেত।এক দিন বুড়ি রাজার কাছে নালিশ করতে বেরলো। যেতে যেতে পথের ধারে একটা পুকুর দেখতে পেল।পুকুর থেকে একটা মাছ বুড়িকে দেখে বলল ঐ বুড়ি কোথায় যাচ্ছো। রাজার কাছে নালিশ করতে যাব।কেনো কি হয়েছে।তখন বুড়ি মনের দুঃখের কথা শুনালো।মাছ বলল আচ্ছা* বাড়ি ফিরার পথে আমাই নিয়েযেও।তোমার ভালো হবে।এর পর বুড়ি হাটতে লাগল । হাটতে হাটতে একটি বেলগাছ দেকতে পেল বুড়ি গাছের নিচে বসল বড়ির সামনে ধপাস করে একটা বেল পরল ।বেলটা বুড়ির দুঃখের কথা শুনে বলল বাড়ি ফিরার পথে আমাই নিয়ে যেও।তারপর বুড়ি রাজদরবারে হাজির হলো। বুড়ি রাজার কাছে নালিশ করতে রাজ হাঁসতে হাঁসতে বলল ফিরে যাও। বুড়ি মনের দুঃখ নিয়ে বাড়িতে এল।পরে দিন রাতে বুড়ি আর পান্তার হড়িতে পান্তা রাখেনি । চোর এসে আর পান্তা খেতে পায় না। তার পর থেকে চোর আর বুড়ি র বাড়িতে পান্তা চুরি করতে আসেনা। বুড়ি তখন মনের আনন্দে পান্তা খেতে পারতো।***"

মৃত্যুর পর মায়ের চিঠি"

লেখক মোঃ রানা সরকার





মা মারা পর কিছুদিন পরে। ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে একটা চিঠি পায় তারছেলে। চিঠিতে লেখা থাকে,,,,, খোকা এই চিঠি তোর হাতে যাবে তখন আমি অনেক দুরে চলে যাব। যেখান থেকে আর কেও ফেরত আসে না। খোকা তোর অনেককথা মনে নেই। তাই আমি লিখে গেলাম তোকে মনে করিয়ে দিতে। তুই যখন ছোট ছিলি তখন তোর একদিন জ্বর এসে ছিলো। আমি তিনরাত না ঘুমিয়ে তোকেনিয়ে বসে ছিলাম। কারন তোকে শুয়ে দিলেই তুই কেদে দিতি। তোর বাবা বলেছিল তোকে শুয়ে দিতে। আমি পারিনি শুয়ে দিতে। তাই তোর বাবা আমাকেঅনে গালাগাল করেছিল। তুই রাতে যখন বিছানায় প্রোশাব করে দিতি তখন তোকে শুকনো জায়গায় শুয়াইতাম আর আমি তোর প্রোশাব করা জায়গায় ঘুমাইতাম। যখন তোর বাবা মারা গেল তখন আমি অনেক কষ্ট করে সংসার চালাইতাম। একটি ডিম নিয়ে এসে তোকে দুই বেলা খাওয়াই তাম। এমনো দিন গেছে আমি না খেয়ে থাকতাম। তারপরও তোকে বুঝতে দেই নাই। একদিন রান্না করার মতো চাউল ছিল না। তখন আমি একটি বাসায় কাজ করে চাউল এনে তোকে রান্না করে খাওয়াই ছিলাম। হয়তো তুই ভুলে গেসিস যখন তোর এস,এস,সি পরিক্ষার ফ্রী ছিলো না তখন তোর বাবার দেওয়া নাকের ফুল বিক্রি করে তোর পরিক্ষার ফ্রী দিয়েছিলাম। আরও অনেক কথা বলতে গেলে অনেক কথা। হয়ত তুই ভাবছিস আমি কেন তোকে এই কথা গুলো বললাম। তুই যখন বড় হলি তখন তুই একটা ভালো চাকরি পাইলি আর একটা বিয়েও করলি। তারপর দিন গুলো ভালোই কাটছিল আমার। হঠ্যাৎ তুই তোর বউয়ের কথা শুনেআমাকে টাকা চুরির অপবাদে আমাকে অন্য একটি রুমে রেখে দিলি। তোর কি মনে হয় আমি তোর টাকা চুরি করেছিলাম। আমি টাকা চুরি করি নি। তারপরওআমি কিছু মনে করে নি। তোকে বলেছিলাম একদিন আমার একা একা ঘরে থাকতেঅনেক ভয় করে। আর খোকা তুই বলেছিলি মৃত্যু হলে যেখানেই থাকি না কেনমৃত্যু হবেই। তারপর একদিন বলে ছিলাম আমার হাটুতে অনেক বেথা ঔষধ কিনে এনে দিতে। কিন্তু তুই আমাকে বললি ঔষধ না খেলেও ভালো হয়ে যাবে। তারপর আমার শরীরে ফোসকা পরে যায়। আর যখন তুই আমার কাছে আসতিতুই মুখে রুমাল দিয়ে আসতি। তুই কখন আসা যাওয়া করিস আমি পথের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এক কাপড়ে কত দিন যে থেকেছি তা বলতে পারব না। তুই যখন ছোট ছিলি তখন আমার কোলে তুই পায়খানা করে দিতি। তারপরও আমার ঘৃনা করে নাই। আর আজ তুই যখন আমার কাছে আসিস তখন তুই রুমাল দিস। কারন আমার শরীর থেকে গন্ধ বের হতো বলে। খোকা তুই আমাকে কোন দিন বলিস নাই মা তোমার কি খাইতে মন চায়। খাওয়ার কথা না হয় বাদ দিলাম। তুই বিয়ের পর আমাকে মা বলেই ডাকিস নাই। যানিস খোকা পৃথীবির সব মাইচায় ছেলেমেয়ের কন্ঠে মা ডাক শুনতে চায়। পেট ভরে খেতে না। খোকা তুইকি পারতি না, আমাকে মা বলে ডাকতে। তুই কি পারতি না, আমাকে একটা কাপড় কিনে দিতে। তুই কি পারতি না, আমাকে একটা ভালো ডাক্তার দেখাতে। আর একটি কথা এই চিঠি তোর ছেলেমেয়েকে পড়িয়ে শুনাস। কারন তার যে বাবা মার সাথে এইরকম না করে। ইতি'''''''' তোর''''' মা। ভালো থাকিস দোয়া করে গেলাম। উপসর্গ: আমরা যে বাবা মাকে কখনো অবহেলা না করি। বাবা মা যে আমমাদের শুখের প্রদিব। তাই তাদের কে কখনো কেও কষ্ট দিও না।

শিক্ষণীয় গল্প(প্রিয় বাবা)

প্রিয় বন্ধুরা, আমি তোমাদের নতুন বন্ধু,আমি এই প্রথম কোন আ্যপে গল্প দিয়েছি,আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই গল্পেরর ঝুড়িকে, আশা করি সকল বন্ধুরা পড়বেন এবং গল্প টা কেমন হল অবশ্যই মন্তব্য করবেন,,,,,,,,,,,,,,, তো আমার গল্পের প্রধান, আলোচ্য বিষয় হচ্ছে কু-সংস্কার যথা: যৌতুক। কোনো এক ভদ্র লোক একটি প্রতিষ্ঠানে ছোট খাটো একটি পদে চাকরি করে। গত মাসে সে তার বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ করে। আবার ইতিমধ্যে ইফতারি দিয়েছে প্রায় ১৫, ০০০/- টাকার। একটু পরে মেয়ের ফোন,,,,,,,,, _বাবা কেমন আছো??? _ হ্যঁ মা ভালো আছি,তুই ভালো, আছিস তো??? _আছি বাবা,,,, _এই ভাবে বলছিস কেন? তোর শ্বশুর -শ্বাশুরি খুশি হয়েছে তো? _ ওরা কিছুু বলেনি ফুফু(স্বামীরফুফু) বলেছে ইফতার নাকি কম হয়েছে, , ,,, _তখন বাবা চোখে পানি টলমল করছিল,,,,,, আচ্ছা মা বলছি যে পরের বার থেকে বাড়িয়ে দিবো। _ বাবা শুন,,, তুমি আমাদের বাড়িতে ঈদের কাপড় দিবে না? _ হ্যঁ মা দিবো তো,,,, কেন? _ তুমি কাপড় দিও না,, খালা(স্বামীর খালা) বলেছে যে কাপড় দিলে নাকি সবাই পছন্দ করবে না,,,, তার চেয়ে টাকা দিয়ে দিলে সবার হয়ে যাবে। _ তো মা কত টাকা?_ বাবা,,, ৩০,০০০/- টাকা বলছে। _ আচ্ছা মা তুই চিন্তা করিস না,,,,,,আমি এখনো বেঁচে আছি। বাবা বুঝতে দেরী হল না এতক্ষনে মেয়ের চোখে অনেক জল গড়িয়ে পড়তেছে,,, _ আচ্ছা,,, বাবা রাখি এখন। সন্ধ্যায়ছোট ছেলে নামাজ পড়ে আসলো,,,, _ বাবা আপনি আছেন, ,,,,,,, _ হ্যঁ আছি তো,, কিছু বলবি,,,,,,, _ হ্যঁ ঈদের পর ২য় সপ্তাহে সেমিস্টার ফাইনাল,আমার টিউশনির কিছু টাকা আছে,, আপনি ২০,০০০/- দিলে হবে। _ আচ্ছা বাবা দেখি,,,,, তুই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়। _না বাবা লেট হলে পরীক্ষা দিতে পারবো না। ঈদের পর, আবার কোরবান মেয়ের বাড়ির জন্য গরু দিতে হবে কমপক্ষে ৫০,০০০/- টাকা লাগবে,, আবার নিজের জন্যও একটা লাগবে। এখানে শেষ নয়,,, আরো রয়েছে মেয়ের বাড়িতে দেওয়া বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন আয়োজন। সব চিন্তা করতে করতে না খেয়ে শুয়ে পড়েছে,। এদিকে সাদিয়ার মা অনেক জিজ্ঞেস করছিল,,,,,,, লোকটি কিছু নাবলে শুয়ে পড়েছে,,,,,,,। শুধু মাথায় একটা বিষয় কাজ করছে,,,,, টাকা!টাকা!টাকা!আর সুখ। এভাবে রাত ১২ টা সময়। সবাই কান্না কাটি করছে। ছোট মেয়ে আর তার প্রিয় স্ত্রী সব চেয়ে বেশি কাদঁছে,, এর মাঝে লোকটি শুনলেন বড়মেয়ের কাছে খবর পৌঁছেছে তার প্রিয় বাবা পৃথিবী ত্যাগ করতে আর বেশি ক্ষণ সময় নেই,, তারমধ্যে সবার দিকে চেয়ে থাকলেন ঠিক ২মিনিট পর লোকটি মারা যান।,,,,,,,,,,,,,,,,, ,,,,,,,,, এভাবে হারিয়ে যাচ্ছে তার মতো অনেক বাবা।আর বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শতশত ছেলেমেয়ে। হয়ত অনেকে জানে না তাদের বাবার মৃত্যুর রহস্য কি? আপনারা বলেন,,,,,, একজন মধ্যবিত্ত বাবার পক্ষে এত কিছু করা সম্ভব! তারা বোঝেনা কেন? কেনওবা বিয়ে নামে শোষণ করে?,,,,,,,,, লিখতে গিয়ে নিজের চোখে জলে আসে,,,,, এভাবেপ্রতিনিয়ত আমরা হারাচ্ছি আমাদের প্রিয় বাবাকে,, ,,,,,, আসুন আমরা সবাই সচেতন হই এবং যৌতুক নামক সামাজিক মারাত্মক ব্যধিকে ধ্বংস করি।।।।।।।।। সবাইকে ধন্যবাদ,, ,,,,,,,,,,,,,,,,,।

শিক্ষণীয় গল্প(★বাস্তবতা★)

+এই, আমি না প্রেগন্যান্ট। কথাটি যখন প্রেমিকার মুখ থেকে শুনবেন তখন আপনার খারাপ লাগবে। তা আপনি যতো বড় মনের প্রেমিক ই হোন না কেনো। ঠিক এই কথাটি ই যখন আপনি স্ত্রীর মুখে শুনবেন তখন আপনার খুশির সীমা থাকবে না। তা আপনি যতো খারাপ স্বামী ই হোন না কেনো। সবকথা সবার মুখে ভালো লাগে না। কিন্তু প্রেমিকার গর্ভবতী হওয়ার কারণও আমরা আবার স্ত্রীর গর্ভবতী হওয়ার কারণ ও আমরা। কী অদ্ভুত! আমরা সারাবছর পড়ালেখা না করে ফেসবুকিং করি। তারপর পরিক্ষায় খারাপ রেজাল্ট করে অনুপ্রেরণামূলক লেখা খুঁজি। কেউ কটু কথা বললে ভালো লাগে না। কিন্তু পরিক্ষায় খারাপ রেজাল্ট এর কারণ কিন্তু আমরা ই! আবার পরিক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা কিন্তু আমাদের হাতেই ছিলো। মন দিয়ে পড়ালেখা করলেই হতো। দোষটা কিন্তু আমাদের ই। সব কিছু কিন্তু আমরা ই করি। তারপর দোষ হয় মন বা অন্য কারোর। যেমন আমরা ভালো জামাটা বারবার পরে পুরোনো করি। তারপর আর ভালো লাগে না। পছন্দের গান টা বারবার শুনি। তারপর আর ভালো লাগে না। প্রিয় মানুষটার সাথে সারাদিন কথা বলি। তারপর আর কথা থাকে না। আমরা অদ্ভুত রকমের প্রাণী। দুনিয়ার সবচেয়ে অসফল ব্যক্তিকে বলেন আপনাকে জ্ঞান দিতে। সে অনায়াসে দিয়ে যাবে। গড়গড় করে আপনাকে সফল হওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিবে। অথচ সে নিজেই পারে নি। বিশেষ করে আমরা বাঙ্গালী অন্যকে পথ দেখাতে ভালোবাসি কিন্তু নিজের পথটা ই খুঁজে বের করতে পারি না। আলাদা করে মোটিভেট হওয়ার দরকার নেই। না দরকার কোনো গল্পের। নিজের জীবনের গল্পই সবচেয়ে সেরা গল্প। নিজের গল্প নিজেকে খাওয়ান, শিখান তারপর কাজে লেগে যান তাতেই হবে। মোটিভেট হতে চাইলে নিজের মা কে দেখুন। " মা একটা আস্ত মোটিভেশন " এই হলো কথা। আমি আপনাকে বুঝাতেপারি কিন্তু নিজে ই বুঝি না! প্রত্যেক আপনি এর এই একটাই দোষ। এই কথাটা শুনতে ও আমাদের ভালো লাগে নাহ?

শিক্ষণীয় গল্প(মনের সৌন্দর্য্য)

Volume++১৮০৫ সাল। সে যুগে মানুষ ঘোড়ায় চড়ে চলাচল করতো। তখন আরেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন থমাস জেফারসন। তিনি তার কিছু সঙ্গী নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে একটি ছোট পাহাড়ী নদী পাড় হচ্ছিলেন। নদী তীরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন লোক তাদের দেখে এগিয়ে এলেন এবং প্রেসিডেন্ট জেফারসনকে বললেন,'আপনি কি আমাকে নদীর ওপাড়ে পৌছে দেবেন?' প্রসিডেন্ট কোন আপত্তি ছাড়াই তাকে পাড় করে দিতে চাইলেন এবং লোকটি ঘোড়ায় চড়ে বসলে দুজনই নিরাপদে নদীর ওপারে পৌছালেন। সেখানে দলের একজন লোক তাকে জিজ্ঞেস করলেন,'তুমি সাহায্য চাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্টকেই বেছে নিলে কেন?' এ কথা শুনে লোকটি হতবাক হয়ে গেল এবং স্বীকার করলো যে সে জানতো না যে লোকটি তাকে এই মাত্র নদী পাড় করে দিল তিনি ছিলেন স্বয়ং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।সে বললো,'আমি শুধু এটুকু জানি যে সাহায্য চাইবার জন্য তোমাদের সবার দিকে তাকালে আমি কারো মুখে 'হা' দেখতে পাচ্ছিলাম এবং কারো মুখে 'না' দেখতে পাচ্ছিলাম। তার মুখে আমি মানুষকে সাহায্য করার জন্য 'হা' দেখতে পেয়েছিলাম।'ভেতরে সৌন্দর্য থাকলে তা প্রকাশ পেতে বাধ্য। অন্তরের সৌন্দর্যের জন্যই জেফারসন পেরেছিলেন এত বড় একটি দেশের প্রসিডেন্ট হতে এবং প্রেসিডেন্ট হবার পরও তার সে সৌন্দর্য এতটুকু কমেনি। আমাদের চিন্তা চেতনা, মনের প্রকৃতি যখন সঠিক হবে তখন সাফল্যের পথে কোন স্বপ্নকেই তেমন কঠিন মনে হবে না, কোন বাধাকেই তেমন উঁচু মনে হবে না।

বাংলা গল্প (পাখির ভালবাসা)


তনয় অর মাহা এক দিন তাদের বাগানে বেড়াতে গেল। হটাৎ মাহা দেখতে পেল গাছের ডালে একটা বাসা আর বাসাতে দুইটি ছোট ছানা অর একটা মা পাখিটা তাদের খাওাচ্ছে । মাহা বলে উঠল দেখ দেখ ভাইয়া একটা পাখির বাসা।তনয় বললো কই। মাহা বললো ঐ তো ঐ ডালটাই ভাইয়া । হ্য়া তাইত বেশসুন্দর। মাহা এ তনয় বল আমরা রোজ একবার দেখতে আসব। আর আমরা পাখিগুলুকে এক জন খেলার সাথী ভাববো। তই নারে মাহা । হ্য়া ভাইয়া। আজ আর নয় বাড়ী চল - আম্মু বকবে । বাসায় এসে দুই জনই পড়তে বসে । মাহা তনয় কে প্রশ্ন করে পাখি কি খায় । ওদের কি বৃষ্টর পানিতে ভিজতে কষ্ট হয় না। এই নিয়ে বার বার প্রশ্ন। তনয় বলে যার বাড়ী তারসেখানে থাকতে ভাল লাগে বুজলি । এবার আম্মু শুনলে বকবে । তারা পরা শেষ করে খেতে গেল খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমতে গেল তারা বিছিনায় শুয়ে শয়ে ভাবতে লাগলো তখন হটাৎ দমকা হাওয়া জানালা যেন আছরে পরার উপক্রমশুর হল প্রচন্ড ঝড় । তখনি পাখিটার কথা মনে পরে গেল মাহার । সে তনয় কে বলল এখন পাখিটার কি হবে ? তার ভাইয়া বলল ঠিকতো........... পরবর্তি পর্ব পরে প্রকাশ করা হবে।।

ইসলামিক গল্প লোভে পাপ পাপে মৃত্য

একদিন হযরত ঈসা (আঃ) ৩জন লোককে নিয়ে রাস্তাদিয়ে হাটছিলেন। কিছুদূর যাবার পর তারা দেখতে পেল ২টি সোনার ইট রাস্তার পাশে পরে আছে। তখন সেই তিনজন লোক ইট ২টি তুলে নিল। তা দেখে হযরত ঈসা (আঃ) খুব রাগ হয়ে বললেন, "তোমরা খুবই খারাপ কাজ করলে। যে জিনিষ তোমরা নিয়েছ তার মত জঘন্য বস্তু আর ২য় টি নেই। তাই তোমরা লোভ না করে ফেলে দাও। আমার কথা যদি অমান্য কর, তবে এমন হতে পারে যে এই খারাপ বস্তুর লোভে তোমাদের শেষ হয়ে যেতে পারে। তারা ঈসা (আ) এর কথা মানলো না। তাই ঈসা (আ) বিরক্ত হয়ে তাদের ছেরে চলে গেলেন। তখন তারা অন্য পথ ধরল। কিছুক্ষণ পর তাদের ক্ষুদার উদ্রেক হল। ২জন তখন পথের ধারে আরাম করতে বসল আর একজন কিছুনা খাবার কিনতে বাজার গেল। বিশ্রামে থাকা লোক দুটির মধ্য একজন বলল, "আমরা মোট ৩জন আর সোনার ইট আছে ২টি। এটা বণ্টন করতে ২টা ইটি ভাঙতে হবে।" আরেকজন বলল,"হায়! যদি আমরা ২জন ২টা ইট নিতে পাড়তাম!" এই মহুর্তে ইবলিশ এর তাদেরকে লোভের তাড়নায় জ্ঞান শূন্য করে দিল। তারা উভই একমত হল যে লোকটি বাজার গেছে সে ফিরত আসলে তাকে তারা মেরে ফেলবে। অপরদিকে যেইলোকটা বাজার গেয়েছিল, সে চিন্তা করল, "ইস! আমি যদি সবগুলা ইট একাইপেতাম।" তাই সে ভাবল তাদের খাবারে বিষ মিশিয়ে তাদেরকে হত্যা করে সবগুলো সোনার ইট সে একাই নেবে। যেই বুদ্ধি সেই কাজ। সে সেখানে পৌঁছানোর তারা তাকে মেরে ফেলে আর বিষাক্ত খাবার খেয়ে তারাও মারা যায়। আর ইটটা ওখানেই পরে থাকে। হে আল্লাহ! আমাদের লোভ থেকে রক্ষা করুন।।

খলিফা অাবু বকর(রা:) এর গোপন অামল

প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর (রাঃ) ফজরের সালাত আদায় করে মরুভূমির দিকে গমন করতেন এবংসেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে শহরে ফিরে আসতেন। হযরত ওমর (রাঃ) তার প্রত্যেহ এরুপ গমনের দৃশ্য দেখে আশ্চার্যান্বিত হলেন। তাই একদিন ফজরের সালাতের পর আবু বকর (রাঃ) যখন বের হলেন, তখন তিনি গোপনে তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলেন। অতঃপর তিনি একটি ঢিলার পিছনেলুকিয়ে থাকলেন ও আবু বকর (রাঃ) কে একটি পুরাতন তাঁবুতেপ্রবেশ করতে দেখলেন। তিনি (আবু বকর রাঃ) সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর বের হয়ে গেলেন। অতঃপর ওমর (রাঃ) ঢিলার আড়াল থেকে বের হয়ে উক্ত তাঁবুতে প্রবেশ করলেন। সেখানে তিনি এক অন্ধ দুর্বল মহিলাকে দেখতে পেলেন, যার কয়েকটি শিশু সন্তান রয়েছে। তিনি মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নিকট কে আসে? মহিলা বলল, আমি তাকে চিনি না। তিনি একজন মুসলিম। প্রতিদিন সকালে তিনি আমাদের কাছেআসেন। অতঃপর আমাদের গৃহ পরিস্কার করে দেন, আঁটা পিষে দেন এবং গৃহপালিত পশুগুলির দুগ্ধ দোহন করে দেন, অতঃপর তিনি চলে যান। বিস্ময়াভিভুত ওমর (রাঃ) বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবু বকর! পরবর্তী খলীফাদের উপর তুমি কত কষ্টই না চাপিয়ে দিলে!!! (তারীখু দিমাশক ৩০/৩২২) এ ঘটনাটিতে আবু বকর (রাঃ) এর দুটি দিক বা গুন প্রকাশ পায়। তা হলঃ . ১। রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে জনগনের উপর তার দায়িত্ব পালন, ২। তার ব্যক্তিগত গোপন আমল। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নিজেদের কিছু গোপন আমল জারি রাখা। ঢাকঢোল পিটিয়ে, মাইকে পোস্টারে নিজের নাম বলিয়ে ইবাদত বা আমল করাতে রিয়ার সম্ভাবনা থাকেযা শিরকের অন্তর্ভূক্ত। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সত্ আমল সমূহ গোপন করতে পারে, সে যেন তাই করে। (সহীহুল জামে, হাদীস নং ৬০১৮) আমাদের আমল, আমাদের ইবাদতগুলো যেন লোক দেখানো নাহয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। নতুবা শিরকের দোষে দুষ্টো হয়েসব পন্ডশ্রম হবে। আল্লাহ আমাদের সঠিক আমল করার তৌফীক দান করুন।

আল্লাহর জিকির রোগ নিরাময়ের উত্তম ওষুধ

নেদারল্যান্ডের মনোবিজ্ঞানী ভ্যান্ডার হ্য...াভেন পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন ও বারবার ‘আল্লাহ’ শব্দটি উচ্চারণে রোগী ও স্বাভাবিক মানুষের ওপর তার প্রভাব সম্পর্কিত একটি নয়া আবিষ্কারের কথা ঘোষণাকরেছেন। ওলন্দাজ এই অধ্যাপক বহু রোগীর ওপর দীর্ঘ তিন বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েও অনেক গবেষণার পর এই আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন।যেসব রোগীর ওপর তিনি সমীক্ষা চালান তাদের মধ্যে অনেক অমুসলিমও ছিলেন, যারা আরবি জানেন না। তাদের পরিষ্কারভাবে ‘আল্লাহ’ শব্দটি উচ্চারণ করার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই প্রশিক্ষণের ফল ছিল বিস্ময়কর, বিশেষ করে যারা বিষন্নতা ও মানসিক উত্তেজনায় ভুগছিলেনতাদের ক্ষেত্রে। সৌদি আরব থেকে প্রকাশিত দৈনিক আল-ওয়াতান পত্রিকাহ্যাভেনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আরবি জানা মুসলমানরা যারা নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করেন তারা মানসিক রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারেন। ‘আল্লাহ’ কথাটি কিভাবে মানসিক রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে তার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন। তিনি তার গবেষণা কর্মে উলেখ করেন, ‘আল্লাহ’ শব্দটির প্রথম বর্ণ আলিফ আমাদের শ্বাসযন্ত্র থেকে আসে বিধায় তা শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি আরও বলেন, লাম বর্ণটি উচ্চারণ করতে গেলে জিহ্বা উপরের মাঢ়ী সামান্য স্পর্শ করে একটি ছোট বিরতি সৃষ্টি করে এবং তারপর একই বিরতি দিয়ে এটাকে বারবার উচ্চারণ করতে থাকলে আমাদের শ্বাসযন্ত্রে একটা স্বস্তিবোধ হতে থাকে। শেষ বর্ণে হা-এর উচ্চারণ আমাদের ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের মধ্যে একটা যোগসূত্র সৃষ্টি করে তা আমাদের হৃদযন্ত্রের স্পন্দনকে নিয়ন্ত্রণ করে।

ইসলামিক কিছু প্রশ্ন

কোন কিছুকে বড় করে দেখলেই সেটা বড় ব্যাপার হয়ে যায়। কোন কিছুকে ছোট করে দেখ তাহলেই সেটা সামান্য মনে হবে। জানেন, এই আয়াতে আখিরাতকে বড় এবং দুনিয়াকে ছোট করে দেখানো হয়েছে।পুরো আয়াতটা এটা নিয়েই। দুনিয়াতে আমরা জীবন যাপন করবো। আমাদের ক্যারিয়ার হবে।আমাদের শিক্ষাগত অর্জন থাকবে।আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতেহবে। এই সব কিছুই জীবনে থাকবে।কিন্তু একটা ব্যাপার কি জানো এই সব কিছু ক্ষণস্থায়ী। সব কিছুই। একদিন আসবে যেদিন এক জমায়েত হবে।এবং সেদিন তারা নামায পড়বে। আর সেদিন তারা একটা ঘোষণা দিবে।যে একটা জানাযা হবে। এবং এই ঘোষণাটা একদিন হবে আমার জন্য এবং একদিন হবে আপনার জন্য। এটা হতে যাচ্ছে এবং একদিন মানুষ আমাদের জন্য জানাজার নামায পড়বে। এবং ততক্ষনে আমরা চিরকালের জন্য চলে গেছি। এবং এটা শীঘ্রই ঘটবে, দেরীতে নয়। আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের জীবনের অনেকখানি তো ইতোমধ্যেই কেটে গেছে। সুতরাং এমন নয় যে সেই দিনটা থেকে আমরা দূরে যাচ্ছি, বরং আমরা সেই দিনের আরো কাছে পৌছাচ্ছি। তাই যত তাড়াতাড়ি আমরা এটা আত্মস্থ করি যে, আল্লাহর কাছে যা আছে তা তুলনামূলক ভাবে ভালো। কারন যে কোন ভাবেই হোকনা কেন আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। তাহলে আমরা নিজেরা নিজেদেরই উপকার করব । যদি আমরা শুধু এটা শিখতে পারি যে কিভাবে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হয়। যেমনটা আমি বললাম যে আমরা ১০ বছরের পরিকল্পনা করি, ১৫ বছরের পরিকল্পনা করি।কিন্তু আমরা আখিরাতের কথা চিন্তাই করিনা। তাহলে আখিরাতের কথা কিভাবে ভাবা উচিত? কিভাবে আখিরাতের জন্য বাস্তবতা ভিত্তিক পরিকল্পনা করা যায়? আখিরাতের জন্য আমরা ১০ বছরব্যাপী, ১৫ বছরব্যাপী পরিকল্পনা করিনা। আমরা এর জন্য দৈনন্দিন পরিকল্পনা করি।এটা দীর্ঘ সময়ব্যাপী লক্ষ্য নির্ধারণ করা নয়। এটা আজকের দিনটা আপনি কিভাবে ব্যয় করলেন তার সাথে সংশ্লিষ্ট। আপনি তার পরে কি করতেযাচ্ছেন এটা তার সাথে সংশ্লিষ্ট। আপনি আগামীকালটা কিভাবে কাটাবেন? আপনি...?

ইসলামিক গল্প(জীবনের উদ্দেশ্য)

সমগ্র মানবজাতি কিসের প্রতি অনুপ্রানিত, কি তাকে আকর্ষণ করে সে বিষয়ে পবিত্র কুরআন খুব ভালভাবেই আলোচনা করে। একাধিকবার আল্লাহ পাক আলোচনা করেন এমন কিছু বিষয়ে, যেমন পুরুষদের মহিলাদের প্রতি আসক্তি, অথবা অর্থের প্রতি আসক্তি, আথবা সামাজিক পদ মর্যাদার প্রতি আসক্তি অথবা মানুষ আশা করে নিজের একটি বাসস্থানের মত সুন্দরকোন জিনিস। তাই মানুষ এগুলো পাওয়ার জন্য কাজ করে, কারন এগুলোর প্রতি তারা প্রবল আসক্তি অনুভব করে। এমনকি আজকালকার দিনেও অনেক যুবক-যুবতীরা হয়ত চায় তাদের ডিগ্রী শেষ করতে অথবা তাদের কর্মক্ষেত্র এগিয়ে যেতে অথবা একটি সম্পর্কের সুত্রপাত করতে চায় যার প্রত্যাশী তারা ছিল। এ সবগুলো বিষয়ই সবসময় বিদ্যমান আছে, সবসময় বিদ্যমান ছিল। এগুলোর একটি আধুনিক রূপ আজকাল বিদ্যমান এবং আরেকটি পুরনো, মানে প্রাক-আধুনিক রূপ আগে বিদ্যমান ছিল। কিন্তু সুনিপুণভাবে কোর’আন ঘোষনা দেয় যে, এগুলো মানুষের প্রকৃত লক্ষ্যবস্তু নয়। তাই কেউ হয়ত কাজ করে যাচ্ছে নিজেকে বিশেষ আকারে পরিবেশন করার লক্ষ্যে নয়ত কেউ কাজ করে যাচ্ছে অন্য কারো সান্নিধ্য পাওয়ার লক্ষ্যে অথবা কেউ কাজ করে যাচ্ছে অতিরিক্ত কিছু অর্থ উপার্জনের আশায়। এগুলোর কোনটিই আসল লক্ষ্যবস্তু নয়। এগুলো হচ্ছে একটি বৃহত্তর সমাপ্তির মাধ্যম মাত্র এবং সেই সমাপ্তি আমরা আমাদের জীবনে যেসকল ক্ষুদ্র মাইলফলক অর্জন করি তার নির্দেশনা দেয়।প্রকৃতপক্ষে এই জীবন শুধুমাত্র বাস্তব কিছু অর্জন করার জন্যই নয়। অথবা শুধু শারীরিক সুখ অর্জনের জন্য নয়। এই জীবন হচ্ছে সঠিক লক্ষ্যবস্তু স্থির করা সম্পর্কে। সঠিক লক্ষ্যবস্তু পাওয়া যায় তখনইযখন আপনি জীবন যাপন করেন শুধুমাত্র আপনার নিজের অবস্থাকে ভাল করারজন্যই নয় বরং আপনার চারপাশের সবকিছু ভাল করার উদ্দেশ্যে। ইসলাম মানে হচ্ছে নিজের ইচ্ছেগুলোকে আল্লাহর ইচ্ছার নিকট সমর্পন করা, যেন আপনি নিজেকে চিরস্থায়ী সুখের জন্য প্রস্তুত করতে পারেন। এবং এটা করার মাধ্যমে আপনি এসব পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের বিসর্জন দেন না, আপনি এই জীবনও উপভোগ করতে পারবেন।

ইসলামিক গল্প (সবাই সেদিন কৃতকর্মের বিনিময় লাভ করব)

বিচার দিবসে প্রত্যেক ব্যক্তিকে আল্লাহর আদালতে জবাবদিহি করতে হবে। পৃথিবীতে মানুষের কত আপনজন থাকে, শুভাকাংখী থাকে, অসংখ্য পরিচিতজন ও বন্ধু থাকে। একজন বিপদাপন্ন হলে আরেকজন তাকে সাহায্য করতে দৌড়ে আসে। আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা হলে যামিন নিতে গেলে বা হাজিরা দিতে গেলে তার সাথে কেউ না কেউ যায়। কিন্তু আল্লাহর আদালতে সে কাউকে সঙ্গী হিসাবে পাবে না। প্রত্যেক ব্যক্তিকে একাকী জবাবদিহি করতে হবে। তার কৃতকর্মের সাফাই আরেকজন গাইবে, এমনটি সেখানে হবে না। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন- আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,(বিচার দিবসের দিন আদালতে আল্লাহ বলবেন) নাও, এখন তোমরা ঠিক তেমনিভাবে একাকীই আমার সামনে উপস্থিত হয়েছো, যেমন আমি তোমাদেরকেপ্রথমবার একাকী সৃষ্টি করেছিলাম। তোমাদেরকে আমি পৃথিবীতে যা কিছুদান করেছিলাম, তা সবই তোমরা পিছনে রেখে এসেছো। এখন আমি তোমাদেরসাথে সেসব পরামর্শ দাতাগণকেও তো দেখি না, যাদের সম্পর্কে তোমরা ধারণা করেছিলে যে, তোমাদের কার্যোদ্ধারের ব্যাপারে তাদেরও অংশ রয়েছে। তোমাদের পারস্পরিক সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছে এবং তোমরা যা কিছু ধারণা করতে, তা সবই আজ তোমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। (সূরা আন’আম-৯৪) পৃথিবীতে মানুষ অসংখ্য সঙ্গী-সাথী জুটিয়ে নেয়। বৈধ-অবৈধ পথে সে সম্পদের পাহাড় রচিত করে তবুও সম্পদ আহরোণের নেশা যায় না। এসব ত্যাগ করে যেতে হবে, সেদিন এসব কোনই কাজে আসবে না। যারা সৎকাজ করেছে অর্থাৎ আল্লাহর বিধান অনুসারে পৃথিবীতে জীবন পরিচালনা করেছে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহকেই রব্ব হিসাবে অনুসরণ করেছে, কেবলমাত্র তাদেরই সঙ্গী হবে তাদের কৃত সৎকাজসমূহ। কোন বিপদ দেখা দিলে বা কোন কামনা-বাসনা পূরণের আশায় মানুষ পীর-দরবেশ-মাজার-ফকিরের কাছে ধর্ণা দিয়ে মনে করতো, এরা তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে, তার মনের কামনা পূরণকরতে পারে, তাকে ধনবান বানিয়ে দিতে সক্ষম, বিচার দিবসে সুপারিশ করতে সক্ষম, সেদিন তারা কেউ কোন সাহায্য করতে পারবে না। আল্লাহর বিধান থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে যেসব নেতা-নেত্রীরা মানুষকে ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তির অধিকারের লোভ দেখিয়ে পরামর্শ দিতো যে, তাদেরকে সহযোগিতা করা হোক, যারা এসব প্রতারণামূলক কথাবার্তায় আকৃষ্ট হয়ে ঐসব নেতা-নেত্রীদের পেছনে ছুটেছে, তাদেরকে যখন আল্লাহর আদালতে উপস্থিত করা হবে, তখন আল্লাহ প্রশ্ন করবেন- তোমাদেরকে যারা পরামর্শ দিতো, তাদেরকে তো আজ দেখা যাচ্ছে না। তারা সবাই আজ সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। মানুষ হিসাবে প্রত্যেক ব্যক্তির একটি স্বতন্ত্র নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। নিজের ব্যক্তিগত পর্যায়ে আল্লাহর সামনে এ জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে। এ ব্যক্তিগত দায়িত্বের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি তার সাথে অংশীদার নেই। পৃথিবীতে যতই অধিক সংখ্যক ব্যক্তিবর্গ, বিপুল সংখ্যকজাতি, দল ও গোষ্ঠী বা বিপুল সংখ্যক সংগঠন একটি কাজে বা একটি কর্মপদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করুক না কেন, বিচার দিবসে আল্লাহর আদালতে তাদের এ সমন্বিত কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে প্রত্যেক ব্যক্তির ব্যক্তিগত দায়িত্ব পৃথকভাবে চিহ্নিত করা হবে এবং তার যা কিছু শাস্তি বা পুরস্কার সে লাভ করবে তা হবে তার সেই কর্মের প্রতিদান- যা করার জন্য সে নিজে ব্যক্তিগত পর্যায়ে দায়ী বলে প্রমাণিত হবে। এইনসাফের মানদন্ডে অপরের গর্হিত কর্মের বোঝা একজনের ওপর এবং তার গোনাহের বোঝা অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়ার কোনই সম্ভাবনা থাকবে না।সুতরাং মানুষের জন্য জ্ঞান-বিবেক ও বুদ্ধির পরিচয় হলো এটাই যে, আরেকজন কি করছে সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে নিজের কর্ম কতটুকু গ্রহণযোগ্য, তার দিকে দৃষ্টি দেয়া। যদি তার মধ্যে নিজের ব্যক্তিগত দায়িত্বের সঠিক অনুভূতি থাকে, তাহলে অন্যেরা যাই করুকনাকেন, সে নিজের সাফল্যের সাথে আল্লাহর সামনে যে কর্মধারার জবাবদিহিকরতে পারবে তার ওপরই অটলভাবে দন্ডায়মান থাকা। মহান আল্লাহ বলেন- আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, যে ব্যক্তি সৎপথ অবলম্বন করে, তার সৎপথ অবলম্বন তার নিজের জন্যই কল্যাণকর হয়। আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হয়, তার পথভ্রষ্টতার ধ্বংসকারিতা তার ওপরেই বর্তায়। কোনবোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না। (সূরা বনী ইসরাঈল- ১৫) ময়দানে ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত গ্রহণের ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন কিছু সংখ্যক লোক রয়েছে, যারা মনে করে- ‘আমরা ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত কবুল করে ইসলামের দল ভারী করলাম। কারণ সমাজে আমাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে, লোকজন আমাদেরকে গুরুত্ব দেয়, সম্মান করে, মর্যাদা দেয়।’ এদের মনোভাব এ ধরনের যে, তারা ইসলামী আন্দোলনে শামিল হয়ে যেন ইসলামের প্রতি করুণা করেছে। এরা আন্দোলনে শামিল না হলে, ইসলাম কোনদিনই প্রতিষ্ঠা লাভ করবে না। এধরনের চিন্তা-চেতনা নিয়ে যারা ইসলামী আন্দোলনে শামিল হয়, তাদের অনুধাবন করা উচিত- কেউ আল্লাহর রবুবিয়াত কবুল করে ইসলামী আন্দোলনে শামিল হলে, এতে তার নিজেরই কল্যাণ হবে। অন্য কেউ তার কল্যাণে অংশ নিতে পারবে না। সে সৎপথ লাভ করলো, এ জন্য আল্লাহর দরবারে বার বার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। কেননা আদালতে আখিরাতে তার ব্যাপারে তাকে একাই জবাবদিহি করতে হবে, অন্য কেউ তার অবস্থা পরিবর্তন করে দিতে পারবে না। মহান আল্লাহ বলেন- আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, সেদিন তোমাদের জন্য কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য চেষ্টাকারীও কেউ থাকবে না। (সূরা আশ শূরা-৪৭)

নামাজ এবং এক দাগীচোরের কাহিনী





যুগের ঘটে যাওয়া কাহিনী থেকে একটি ঘটনার কথা বলছি, এক এলাকায় এক চোর ছিল, সে বয়সে যুবক প্রতিবেশিদের লোটা-ঘটি, বাটি, হাড়ি-পাতিল ইত্যাদি চুরি করতো। এ জন্য সে চোর হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করলো। একদিন সে চিন্তা করলো, এলাকায় যখন দাগীচোরের খেতাব পেলাম, তাই এখনথেকে আমাকে বড় চোর হতে হবে। এবং তা হতে হলে কি করতে হবে? ভেবেচিন্তে ঠিক করলো প্রথমেই রাজার বাড়িতে চুরি করতে হবে। রাজবাড়িতে ঢুকে আড়াল থেকে দেখতে পেলো, রাজা ও রাজকন্যা বসে আলাপ করছেন। শুনতে পেলো রাজা তার মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘মা, তোমার কাছে এত সুন্দর ভালো নামী-দামী পাত্রের প্রস্তাব আসে, তুমি তা একটাও পছন্দ করছো না এর কারণ কী মা, বলো? মেয়েটি পিতার কথা শুনে উত্তর দিলো, ‘আব্বা এইসব পাত্র আমার পছন্দ নয়। রাজা বললেন, কেন মা, তোমার কেমন পাত্র পছন্দ আমার নিকট মন খুলে বলো, তুমি আমার একমাত্র কন্যা। মেয়েটি পিতাকে জিজ্ঞেস করলো, আব্বা আমি আমার পছন্দের কথা বলবো কি? পিতা বললেন, হ্যাঁ মা তুমি বলো। মেয়েটি বললো, আব্বা আপনার রাজ্যে এমন কোন নওজোয়ান পাবেন কি? যে একাধারে চল্লিশটি জুমার নামাজ আদায় করেছে, তাহলে আমি তার সাথে চির বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি আছি। পিতা বললেন, মা, আমি তোমার জন্য এমন পাত্রই খুঁজে বের করবো। মেয়েটি বললো, পাবেন সত্যি, তবে এটা কোন রাজা-বাদশাহর ছেলে হয়তো হবে না, যদিও পান সে সাধারণ ছেলেই হবে। তবে তাকে যদি আপনার জামাতা বানাতে হয়, তাহলে আপনার সম্পদ থেকে কিছু সম্পদ দিয়ে তাকে সম্পদশালী করে নিতে হবে। পিতা বললো, মা, তুমি আমার একমাত্র কন্যা, যে আমার জামাতা হবে সে-ই তো আমার সকল সম্পদের মালিক হবে। এই কথা শুনে চোর বেটা ভাবতে লাগলো, এই তো আরেকসুবর্ণ সুযোগ। রাজার জামাতা হবে শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগবে না, টাকা-পয়সা লাগবে না। শুধু চল্লিশটি জুমা নামাজ পড়লেই রাজকন্যাকে বিয়ে করা যাবে। তাহলে আর এই সুযোগ ছাড়া যাবে না। চোর বেটা রাজবাড়িথেকে বেরিয়ে, সোজা এসে মসজিদের বারান্দায় বসে বসে চিন্তা করতে লাগলো, ‘হায়! জীবনে তো কোনদিন নামাজই পড়ি নাই। আজ কেমন করে নামাজ পড়বো? এই চিন্তা করে করে ব্যাকুল হয়ে পড়লো। ইতিমধ্যে ফজরের আজানের সময় হলো। মুয়াজ্জিন আজান দিল, আজানের পর সে বললো, হে আল্লাহ আমি কীভাবে নামাজ পড়বো? আমাকে রাস্তা দেখাও। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল এক মুসল্লি এসে সুন্নত নামাজ পড়ছে। এরপর আরেক মুসল্লি এসে নামাজে দাঁড়ায়, তার পাশে দাঁড়িয়ে ওই মুসল্লির মতো করে চোরবেটাও নামাজ আদায় করলো। এরপর ইমাম সাহেব নামাজে দাঁড়ালো। চোর বেটাও ফজর থেকে এশা পর্যন্ত এভাবেই জামাতের সাথে নামাজ আদায় করলো।এই থেকে তার নামাজ পড়া শুরু হলো। এভাবে কয়েক দিন যাওয়ার পর, চোরবেটা ইমাম সাহেবকে বললো, হুজুর আমাকে কিছু সুরা কিরাত শিখাবেন? ইমাম সাহেব উত্তর করলেন, আরে ভাই তোমার মত একজনকে নামাজশিখাতে পারলে তো আমার জীবন ধন্য হবে। ইমাম সাহেব তাকে ছাত্র হিসেবে তালিম দিতে শুরু করলেন। এভাবে সুরা কিরাত শিখতে শিখতে সে একজন পূর্ণ মুসল্লিতে পরিণত হলো। এখন সে আর এক ওয়াক্ত নামাজও ক্বাযা করে না, এভাবে দিন মাস বছর কেটে যাচ্ছে। এদিকে রাজা হঠাৎ তার রাজ্যে লোক-লস্কর দিয়ে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করে দিলেন, এ রাজ্যে এমন কোন নওজোয়ান ছেলে আছে কি, যে একাধারে চল্লিশ জুমা নামাজ আদায় করেছে? যার একটি জুমাও ক্বাযা হয় নাই? তাহলে ওই ছেলের সাথে রাজকন্যাকে বিবাহ দেওয়া হবে। রাজ্যে এমন কেউ থাকলে তিনি রাজ দরবারে উপস্থিত হয়ে রাজকন্যাকে বিবাহের প্রস্তাব দিতে পারেন। এভাবে সমস্ত রাজ্য ঘুরে তারা কোন পাত্রের সন্ধান পাচ্ছিল না, সবশেষ তারা চোর বেটার এলাকায় আসলো তখন এলাকার সর্ব সাধারণ শাহী অ্যালান শুনে বলতে লাগলো, এলাকায় এমন কোন ছেলে নাই তবে, একটি ছেলের সন্ধান আমরা দিতে পারি, সে আমাদের মসজিদেই পড়ে থাকে। আর নামাজ জিকির-আজগার নিয়ে ব্যস্ত থাকে, হয়তো ছেলেটি চল্লিশ জুমা আদায়কারী হতে পারে। তখনই মসজিদে গিয়ে তারা দেখে ছেলেটি আল্লাহর ধ্যানে মশগুল। তারা অপেক্ষা করলো যুবকের ধ্যান ভাঙার জন্য। ধ্যান ভাঙার পর, রাজার ঘোষণাপত্র পড়ে শুনালো। যুবক বললো, আপনারা চলে যানএবং আপনাদের মালিকের গোলামী করেন গিয়ে। আর আমাকে আমার মালিকের গোলামী করতে দেন। আমার কোন রাজকন্যা দরকার নেই। এ কথা বলে যুবক তাদেরকে বিদায় করে দিলো। রাজ দরবারে গিয়ে তারা সব কথা রাজাকে বললো। রাজা শুনে আরো খুশি হয়ে বললেন, এমন ছেলেই তো আমার দরকার। তোমরা যে কোন মূল্যে ছেলেটিকে হাজির করো। নইলে তোমাদের কারো চাকরিথাকবে না। পুনরায় তারা যুবকের কাছে গিয়ে অনুরোধ করে বললো, আপনি যদি রাজ দরবারে না যান তাহলে আমাদের চাকরি থাকবে না। দয়া করে আপনিরাজার সাথে দেখা করেই চলে আসুন। যুবক তাদের অনুরোধে যেতে বাধ্য হলো। রাজ দরবারে গিয়ে প্রথমেই অত্যন্ত আদবের সাথে রাজাকে সালাম দিলেন, তার আদব-ভক্তি শ্রদ্ধা দেখে মুগ্ধ হলেন। এবার রাজা বলতে শুরু করলেন, ‘বাবা, আমার একমাত্র কন্যা, সে কোন রাজা-বাদশাহর ছেলেকে চায় না। সে আমাকে অনুরোধ করেছে, যে একাধারে চল্লিশ জুমা নামাজ আদায় করেছে একটি জুমাও ক্বাযা হয় নাই এমন পাত্রকেই সে বিয়ে করবে। আমি শুনেছি তোমার চল্লিশ জুমার অধিক নামাজ আদায় হয়েছে, তাই তোমার সাথে আমার একমাত্র কন্যার বিবাহের প্রস্তাব করলাম। রাজার কথা শুনে যুবক বললো, হুজুর আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই। রাজা বললেন, বলো বাবা। যুবক, হুজুর আপনি যদি আমার আসল পরিচয় জানেন তাহলে আপনার মেে তো দূরের কথা চাকরানীকেও আমার সাথে বিয়ে দিবেন না। আমি এক রাতে আপনার বাড়িতে চুরি করতে এসে গোপনে শুনলাম, আপনি মেয়ের সাথে এ বিয়ের ব্যাপারে আলাপ করছেন। এবং ওই দিন থেকেই আমি নামাজ পড়া শুরু করি। হুজুর বেয়াদবি মাফ করবেন চল্লিশটি জুমার বিনিময়ে যদি রাজার মেয়েকে বিয়ে করা যায়, তাহলে আরও চল্লিশটি জুমারনামাজ আদায় করলে জান্নাতের হুর পাওয়া যাবে। দয়া করে আমাকে মাফ করবেন। আপনি অন্য কোথাও আপনার মেয়েকে বিবাহ দেন। আল্লাহর কি মেহেরবানি ছেলেটি নামাজ-জিকির ও ধ্যান করে করে খাঁটি ঈমানদার হয়ে আল্লাহর অলিত্ব লাভ করলো। অথচ একদিন যে ব্যক্তি রাজকন্যাকে পাওয়ারলোভে নামাজ ধরেছিল, আজ নামাজ-ই তাকে সেই রাজকন্যা ও রাজ্যের লোভ থেকে ফিরিয়ে আনলো আল্লাহর প্রেমিক করে। আল্লাহতায়ালা ইচ্ছা করলে কি না পারেন। এ দুনিয়ায় ভোগ-বিলাসীতার ব্যাপক বিস্তার তবুও তা ক্ষণিকের, এই সামান্য সময়ের মধ্যে ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকার কারণে, যদি মৃত্যুর পরে অনন্তকাল সাজা খাটতে হয় তবে, ভোগের চেয়ে সংযোম ধারণ করাই ভালো। আমার প্রাণপ্রিয় মুর্শিদ খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজানও মানুষদের এমনই সহ্-িশুদ্ধভাবে হুজুরি দিলে নামাজ আদায় করার নিয়ম-পদ্ধতি শিক্ষা দিয়ে থাকেন। যে নামাজে প্রকৃত শান্তি আসে। মহান আল্লাহ যেন আমাদের ঐ যুবকের মতো সহ্-িশুদ্ধ নামাজি হিসেবে কবুল করেন, আমিন। লেখক : সম্পাদক মন্ডলির সদস্য, মাসিক আত্মার আলো ॥ চেয়ারম্যান, আল জয়নাল গ্রুপ, নারায়ণগঞ্জ ॥ বিশিষ্ট খাদেম, কুতুববাগ দরাবার শরীফ

বিসমিল্লাহ বলার ফজিলত

বিছমিল্লাহ বলার ফজিলত! বর্ণিত আছে যে, কোন এক মহিলার স্বামী ছিল মুনাফেক। সে মহিলার অভ্যাস ছিল প্রতিটি জিনিসের পূর্বে সে"বিসমিল্লাহ" পড়তো, হউক তা কাজ বা কথা । একদিন তার স্বামী বলল (মনে মনে চিন্তা করল) , আমি এমন একটি কাজ করব যা দ্বারা আমি তাকে"বিসমিল্লাহ" বলার ক্ষেত্রে লজ্জিত করবো । অতএব, তার কাছে একটি থলে দিল এবং তাকে বলল , তুমি এটাকে হেফাজত করে রাখ ।ঐ মহিলাটি থলেটি কে এক জায়গায় লুকিয়ে রাখলো, সুযোগ বুঝে এক সময় তার স্বামী থলেটি নিয়ে নিল এবং থলেটিকে তার বাড়ির কূপে ফেলে দিল । অতঃপর স্ত্রীর নিকট এসে থলেটি ফেরত চাইল । মহিলাটি যথাস্থানে এসে"বিসমিল্লাহ" বলে হাত বাড়িয়ে দিল । আল্লাহ তায়ালা হযরত জিবরাঈল(আঃ) কে তৎক্ষণাৎ অবতরণের আদেশ প্রদান করলেন এবং থলেটিকে তার স্থানে পূর্বের ন্যায় রেখে দিতে বললেন । অবশেষে সে তা যেভাবেরেখেছে সে ভাবেই পেল । তার স্বামী আশ্চর্যান্বিত হয়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে তওবা করে ক্ষমা চাইল। সুবাহানাল্লাহ।। [কিতাবুল কালয়ুবি ঘটনা নং ১১,পৃষ্ঠা নং ৪৫]

মক্কা শরীফের মাটি দিয়ে তৈরি যে মসজিদ


ইবাদতের শ্রেষ্ঠ স্থান মসজিদ। বর্তমান বিশ্বের বহু মসজিদে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তবে পবিত্র মক্কা নগরীর মাটি দিয়ে তৈরি মসজিদ এইউপমহাদেশে কিন্তু একটাই। নাম মক্কা মসজিদ। এটি পবিত্র নগরী মক্কারকোনো মসজিদ নয়। আলোচিত এই মসজিদটি আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদ জেলায় একটি অবস্থিত। মসজিদটির মূল ভবনের ইট তৈরির জন্য মাটি আনা হয় সৌদি আরবের মক্কা থেকে। তাই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে ‘মক্কা মসজিদ’। মসজিদটি ভারতের বৃহৎ ও প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম এবং ঐতিহাসিক পুরাতন হায়দ্রাবাদ শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। কুতুব শাহি সাম্রাজ্যের পঞ্চম শাসক মোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ মসজিদটি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মসজিদটি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং পুরো শহরের পরিকল্পনাকারী ছিলেন তিনি। মসজিদটির সামনের খিলানগুলো গ্রানাইডের টুকরা দিয়ে নির্মিত। এগুলো নির্মাণে সময় লেগেছে পাঁচ বছর। মসজিদটিনির্মাণে পাঁচ হাজার শ্রমিক অংশ নেন। মসজিদটির ভিত্তি স্থাপন করেনমোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ। পরে মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেব হায়দ্রাবাদ জয়ের পর মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ করেন। মসজিদের প্রধান নামাজ কক্ষটির দৈর্ঘ্য ১৮০ ফুট। প্রস্থ ২২০ ফুট আর উচ্চতা ৭৫ ফুট। একসাথে ১০ হাজার মুসল্লি এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির প্রধান নামাজকক্ষটির ছাদ স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি খিলানের ওপর। এই ১৫টি খিলান সাজানো হয়েছে তিনটি সারিতে। প্রতিটি সারিতে রয়েছে পাঁচটি করে খিলান। মসজিদের প্রধান স্থাপনা দু’টি বিশাল অষ্টাভুজাকৃতির কলাম দ্বারা সংগঠিত। প্রতিটি কলাম তৈরি করা হয়েছে একটিমাত্র গ্রানাইডের টুকরা দিয়ে। মসজিদের মূল ভবনের ছাদের চার দেয়ালের বাইরের অংশ গ্রানাইড ব্লক দিয়ে আবরণ দেয়া। মসজিদটির কাছেইঐতিহ্যবাহী চৌমহল্লা, লাদ বাজার ও চারমিনার অবস্থিত। এই মসজিদের স্থাপনার সঙ্গে ঐতিহাসিক চারমিনার ও গোলকন্দা দুর্গের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। মসজিদ এলাকায় প্রবেশ দরজায় কোনাকুনি আকৃতির একটি দালানআছে। যেখানে মার্বেল পাথরের আবরণকৃত কিছু কবর আছে। এই স্থাপনাটি তৈরি করা হয় আসাফ জহির শাসনামলে। এই ভবনে বাদশা নিজাম ও তার পরিবারের সদস্যদের মাজার বিদ্যমান। মক্কা মসজিদটি ভারতের প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। দীর্ঘদিন এটা রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং দুষণের ফলে এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার অনেক অংশ নষ্ট হয়ে যায় ও ভেঙে যায়। ১৯৯৫ সালে এই স্থানে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংগঠিত হয়। তাই ভবিষ্যতে এই স্থাপনাটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা জন্য অন্ধ্র প্রদেশ সরকার ২০১১ সালের আগষ্ট থেকে যানবাহনমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে।

ইসলামিক গল্প(দরুদ শরীফের ফজিলত)




একদা একটি মহিলা হযরত হাসান বসরী (রঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে বলল, কিছুদিন হয় আমার একটি যুবতী মেয়ে মারা গেছে, সেজন্য আমার হৃদয় ভারাক্রান্ত। আমাকে এমন একটি তদবির বলে দিন যাতে আমি তাকে স্বপ্নে দেখতে পারি। অতঃপর হযরত হাসান বসরী (রঃ) তাকে তদবির বলে দিলেন। মহিলাটি সে অনুযায়ী আমল করার পর একদিন দেখতে পেল যে তার কন্যাটি আলকাতরার পোষাক পরিহিতা, গলায় লোহার জিন্জির পড়ানো ও পায়েবেড়ি লাগানো আছে। মহিলা এ কথা হযরত হাসান বসরী (রঃ)কে জানালে তিনি চিন্তান্বিত ও দুঃখিত হলেন। এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হলে হযরতহাসান বসরী (রঃ) নিজে সে কণ্যাটিকে স্বপ্নে দেখেন যে, সে বেহেশতেপদচারনা করছে এবং মাথায় বেহেশতি তাজ। মেয়েটি তখন হযরত হাসান বসরী (রঃ) কে বলল, হে হাসান। আপনি কি আমাকে চিনতে পারেন নাই ? আমি সে মহিলাল কন্যা, যে আমাকে স্বপ্নে দেখার জন্য তদবির নিয়েছিল।’ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, পূর্বে তো তোমার এরূপ অবস্থা ছিল না। কিভাবে তোমারপূর্বাবস্থা পরিবর্তন হলো এবং তুমি এ পর্যায়ে উন্নীত হলে- এর কারনকি? সে বলল, এর কারন হচ্ছে এই যে, একদা এক ব্যক্তি আমার কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হুজুর সাল্লালাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ শরীফ পাঠ করেছে। তখন কবরস্থানের পাঁচ ব্যক্তির উপর গোর আযাব হচ্ছিল। সেই পথিক লোকটির দরুদ শরীফ পাঠ করার পর আমরা একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। তাতে বলা হচ্ছে - এই ব্যক্তির বরকতে এদের উপর থেকে আযাব উঠিয়ে নাও। অদঃপর তৎক্ষনাত আমাদের আযাব বন্ধ হয়ে গেল। মুকাশাফাতুল কুলুব-ইমাম গাজ্জালী (রঃ)।

ইসলামিক গল্প (কবরের আযাব)

islamic golpo

কবরের_আযাব– নবীজি সাঃ অনেকগুলো কবর দেখলেন । খুশী হলেন । শেষমেশ একটা কবরের সামনে গেলেন। উনার চেহারা মুবারকে ঘাম দেখা দিল। তিনি অস্হির হয়ে পড়লেন। দুঃচিন্তায় চেহারা কালো হয়ে উঠল। হয়রান পেরেশান হয়ে গেলেন তিনি। একজন সাহাবী (রাঃ) উনার অবস্হা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এত পেরেশান কেন ? ‘হায়, হায়’ ! তিনি অস্হির হয়ে বললেন, ‘এই কবরের বাসিন্দার উপর ভয়ানক আযাব হচ্ছে । এমনই শাস্তি যা ভাষায় বলা যায় না । আহা ! এই ব্যক্তির কি উপায় ?’ বলে তিনি কবরে হাত মুবারক রেখে দোয়া করলেন ।কিন্তু চেহারায় প্রশান্তি এলো না । তিনি বললেন, ‘দোয়া কবুল হচ্ছে না । কোন রহস্যময় কারণে । সাংঘাতিক বড় পাপ করেছে সে ।’ হুজুর (সাঃ) এর উপর অস্হিরতা বেড়েই চললো । তিনি বললেন, ‘ আমার উম্মতের উপর এমন কঠিন শাস্তি হচ্ছে আর আমি বাড়ী গিয়ে ঘুমাবো ? তিনি একজন সাথীকে ডেকে বললেন, ‘যাও, মদীনার বাজারে । সেখানে আওয়াজ দিয়ে ডাকোযাদের আত্নীয়ের কবর এখানে রয়েছে । ‘ তারা এলো । তাদেরকে নিজ নিজ আত্নীয়ের কবরে দাড়াতে বললেন । সবাই দাড়ালো । কিন্তু আশ্চর্য্য ! ওই কবরের পাশে কেউ দাড়ালো না । বেদনায় নীল হয়ে গেলেন হুজুর (সাঃ)। অনেক পরে এলো এক বুড়ি । ধীর পায়ে । লাঠিতে ভর দিয়ে । তিনি দাড়ালেন সেই কবরের পাশে । হুজুরের পাক (সাঃ) স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন । তারপর বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এটা কার কবর ?’ ‘আমার ছেলের ।’ বৃদ্ধা বললেন । ‘আপনার ছেলের কবরে ভয়ানক শাস্তি হচ্ছে ।’‘ইয়া রাসূলূল্লাহ ! এটা কি সত্যি ?’ ‘সত্যিই ‘ । ‘শুনে আমি খুব খূশী হলাম ।’ ‘আল্লাহ মাফ করুন ! আপনি এ কি বলছেন মা ?’ সে আপনারসন্তান !’ শুনুন তাহলে, হে আল্লাহর রসূল ! এই বাচ্চা যখন আমার পেটে তখন তার বাবা মারা যায় । সে পৃথিবীর মুখ দেখল । তার কেউ ছিলোনা । আমি নিদারুণ কষ্ট করে তাকে বড় করে তুললাম । তিল তিল করে । সেবিয়ে করল । স্ত্রীকে পেয়ে সে ভূলে গেল আমাকে । একদিন তার ভালোবাসার বউ কানে কানে কি যেন বলল । ছেলে রাগে অধীর হয়ে মারতে শুরু করল আমাকে । ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেলাম আমি । জ্ঞান হারালাম । হুশ ফিরলে আমি প্রার্থনা করলাম , প্রভুর দরবারে । দু’হাত তুলে । বললাম, ‘হে আল্লাহ ! তাকে কবরে শাস্তি দাও । অনন্ত কাল ধরে । দুনিয়াতে দিওনা । চোখের সামনে ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারব না । ‘ ‘হে আল্লাহর রাসূল ! আমি এখন এজন্য খূশী যে আমার দোয়া কবূল হয়েছে । ‘ হুজুর (সাঃ) অত্যাচারিতা সরল প্রাণ এই বৃদ্ধার কথা শুনে চোখের পানি চেপে রাখতে পারলেন না । উনার মুক্তার মতো অশ্রু , গাল বেয়ে ফোটায় ফোটায় পড়তে লাগল । খানিকপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, ‘হে বৃদ্ধা মা ! তুমি তোমার ছেলেকে ক্ষমা করো । সে ভয়াবহ শাস্তি পাচ্ছে । ‘ বৃদ্ধা বললেন, ‘হে রাসূলূল্লাহ ! অন্য কিছু বলুন । ছেলেকে ক্ষমা করব না আমি ।’ নিরুপায় হয়ে হুজুর (সাঃ) আকাশের দিকেমূখ তূললেন । কাতর স্বরে বললেন, ‘হে আল্লাহ ! এই বৃদ্ধাকে কবরের শাস্তি দেখাও ।’ চোখের পলকে ঘটনা ঘটল । বৃদ্ধার চোখ বিস্ফোরিত হলো। সে প্রাণ ফাটা চিৎকার করে বেহুশ হয়ে গেল । খানিক পর ।জ্ঞান ফিরলবৃদ্ধার । থর থর করে কাপছেন তিনি । তীর খাওয়া কবুতরের মত । তিনি বললেন, ‘ওগো খোদা ! কবরের আযাব কি এমন ভীষণ ! এমন ভয়ানক ! ছেলের পুরো শরীর থেকে চামড়া উঠিয়ে নেয়া হয়েছে । তাকে মুগুর পেটা করা হচ্ছে । হে আল্লাহর রাসূল ! আমি তাকে ক্ষমা করলাম । আপনি দোয়া করুন । সে যেন মুক্তি পায় । ‘ হুজুর (সাঃ) হাত উঠালেন । দোয়া শেষ। উনার চেহারা উজ্জ্বল । প্রকৃতিতে, আকাশে বাতাসে নেমে এল সুমহান সমাহিত পরিবেশ ।


মৃত্যুর শেষ ডাক

সন্ধ্যে ঘনিয়ে এসেছে। ঝিঁঝিপোকাদের শব্দ ভেসে আসছে বাড়ির পশ্চিম পাশের বাঁশ ঝাড় থেকে। বিশাল আয়তনের বাঁশঝাড়, লোকমুখে শুনা যায় এখানে অনেকের সাথে ঘটেছে অঘটন! প্রতিটি সন্ধ্যে মানে প্রতিদিন নতুন কিছুর আবির্ভাব! কোনো সময় অচেনা নামে, ডাকে, তো কোনো সময় ছোট্ট বাচ্চাদের কাঁন্নার সুর বাজে লাগাতার। তবে সন্ধ্যার কিছুটা পর আবার সব নিস্তব্ধ। একদম নিশ্চুপ কোলাহল বিহীন একটা ঝাড়।মানে সেই বাঁশ ঝাড় যার রহস্য ভেদ করতে পারেনি আজ অবধি।কেন এমন হয়! প্রশ্ন জাগে সবার মনে। তবে সেই প্রশ্নটা নিছক প্রশ্ন হয়েই থেকে গেল সবার মধ্যে।কেউ আগ বাড়িয়ে প্রশ্নের জবাব খুঁজতে যায় নি।কারণ যেই এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়েছে।বিনিময় মহা বিপদ নেমে এসেছে তার জীবণে।তার প্রত্যেকটি কাজে। এমন ঘটনা একটা দুটো নয়।গ্রামের প্রায় বেশকিছু সংখ্যক লোকের সাথেই এটা হয়েছে। সবাই এড়িয়ে চলতে চায়এই ঝাড়টা। গ্রামের লোকেরা এই বাঁশ ঝাড়কে ডাকে মৃত্যুর ডাক। কি জন্যে বা কী উদ্দেশ্যে নামটা রাখা হয়েছে কেউ জানে না বা কে রেখেছেসঠিক তাও জানা নেই।পূর্বের বংশের কাছ থেকে শুনে আসছে এবং এটাকেই ধরে রেখেছে গ্রাম বাসী আজোও। কিন্তু সবাই মৃত্যুর ডাক বাঁশের ঝাড় এড়িয়ে যেতে চাইলেও পারে না। গ্রামের মধ্যবর্তী একটা হাঁট। সেখানে গ্রামের মানুষগণ বাজার করতে যায়।কেউ জমিতে ফলানো ফসল, শাক, সবজি, ইত্যাদি বিক্রি করতে যায়।তবে সেই বাজারে যেতে হলে একটাই রাস্তা।একটাই পথ। গ্রামের পশ্চিম পাশে বিস্তর জমিন।সেখানে কৃষক ভাইয়েরা চাষাবাদ করেন। সেই বিস্তর জমির পাশ ঘেঁষেই সেই মুত্যুর ডাক নামের বাঁশ ঝাড়টা।একেবারে গ্রামের প্রধান সড়কটার গা ঘেঁষে প্রায় অনেকটা পথ দখল করে রেখেছে। দুইপাশে বাঁশঝাড় তার মধ্য বরাবর সেই গ্রামের প্রধান সড়ক।যা দিয়ে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজে বাজারে যান গ্রামের প্রতিটি মানুষ। এই তো বেশ কিছু দিন হলো।গ্রামের শফিকুর রহমানের ছেলে আজগর আলী, বাজার থেকে ফিরছিল। কিন্তু সে দিন খুব তাড়াতাড়ি ফিরবে বলে আশা করলেও ভাগ্যের পরিহাসে সেদিন সন্ধ্যারবেশকিছু পর বাজার থেকে সবে মাত্র রওনা দিয়েছে। বাড়িতে ফিরতে ফিরতেঅন্ধকার ঘনিয়ে ভূতুড়ে পরিবেশ তখন পুরো বাজার ছমছম করছে। কিন্তু কীআর করা! বাড়ি তো ফিরতে হবে।না হলে আস্তে, আস্তে বাজারের লোক জনশূণ্য হয়ে যাবে।তখন কী একা থাকব? মোটেও না। তবে সেই ভয় মনের ভেতর! যদি মুত্যুর ডাক বাঁশ ঝাড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটে যায়? তখন? সে কি বেঁচে আসতে পারবে? নাকি শেষমেষ ভূতের কবলে পড়েমরতে হবে? এমন অজানা চিন্তা ভাবনা তখন আজগর আলীর মনকে বলছিলো"তুই চাস নে " তাও মনের বিরুদ্ধে গিয়ে রওনা হলো এই ভরসায় যে মুত্যু তো একদিন আগে পরে হবেই। সুতরাং ভয় করে কোনো ফায়দা নেই। সেদিন বাজারে সে জমিনের ফলানো সবজি, টমেটো আর কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে গিয়েছিল। বিক্রি শেষ হতে, হতেই দেরী হয়। ডান হাতে হারিকেন আরবাম হাতে সবজি নিয়ে আসার ঝুঁড়ি। কাঁপা, কাঁপা পায়ে হেঁটে প্রায় সেই জঙ্গলের কাছাকাছি চলে এসেছে। কিন্তু ভয়টা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে চারপাশের পরিবেশটা।ঘুটঘুটে অন্ধকার।ব্যাংঙ্গের ডাক, ঝিঁঝিপোকাদের ঝিঝি শব্দ ভেসে আসছে মৃত্যুর ডাক বাঁশঝাড় থেকে। এর মধ্যে সে কী পারবে নিজেকে বাঁচিয়ে ফিরে যেতে! নাহ্। নাকি হ্যাঁ? তবে সেটা সময়বলে দিবে। আজগর একটু দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করল।যদি এই রাস্তা দিয়ে কেউ আসে! তো সে তার সাথে যাবে।কোনো ভাবেই সম্ভব না একা একা দুই পাশে বাঁশঝাড় মধ্যখানে রাস্তাটা দিয়ে যাওয়া। কিন্তু বেশ কিছু সময় থাকারপরেও কেউ আসছে না। আজগর মনে মনে বললো।হায় রে আমার পুড়া কপাল। আমি যে কেনো এই বাজারে গেলাম।একবার যদি ফিরে যেতে পারি তো আর কোনো দিনসন্ধ্যের পর আসব না বাড়ি হয় বিক্রি হোক না হয় না হোক। হারিকেন এর আলোতে যতোটুক দেখা যাচ্ছে কেউ নেই আশপাশে। গ্রামের মানুষ এই সময়টাতে খেয়ে দেয়ে ঘুম গিয়ে অর্ধমৃত প্রায়। তবে আর অপেক্ষা নয়।কোনো মতেই নয়।কারণ রাত যতো বাড়বে ততোই বিপদ।মহা বিপদ নেমে আসবেএই অন্ধকার মৃত্যুর ডাক ঝাড়ে। কাঁপা, কাঁপা পায়ে এবার রওনা হলো বেশ কিছুক্ষণ চিন্তাভাবনা করে। হাঁটু যেন যেতেই চাইছে না।অজানা আতংক, ভয় হৃদপিন্ডে ধুকধুক করছে প্রতিনিয়ত! মরনের ভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছ মস্তিষ্কে। প্রানপণে হারিকেনটার আলো বাড়িয়ে দিয়ে জোরে, জোরে হাঁটতে লাগলো আজগর আলী। অনেকটা পথ এভাবে যেতে হবে।চার মিনিট যেতে হবে এভাবে জোরে জোরে হাঁটলেও।বুঝতেই পারছেন কতটা বিশাল আয়তন মুত্যুর ডাক "বাঁশ ঝাড়টা! আন্দাজ করা যায় তবে কখন কীভাবে অদৃশ্য জগতের আত্মা, অদৃশ্য জগতের সেই বিভৎস মানুষগুলোর সাথে কখন দেখা হয়ে যায় মনের অজান্তে, চোখের পলক না পড়তেই, দেখতে মন না চাইলেও কিন্তু ওরা দেখা দেয়।কি জন্য দেয়? সেটা যারা সেই পরিস্থিতি সম্মুখীন হয়েছে তারাই ভালো বলতে পারবে। এমন পরিস্থিতির সম্মুখে দাঁড়িয়ে যে কেউ আজান্তেই ভয় পাবে এটাই স্বাভিক এটাই মানতে হবে।কারণ অদৃশ্য জগতের মৃত মানুষের সাথে আমাদের সব সময় দেখা হয় নাএবং তারা আমাদের মতো স্বাভিক নয়। মনে, মনে এমন হাজারও চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে আজগরের মাথায়।দু'পা যেন সামনে এগোতেই চাইছে না বরংচো পিছু ফিরে যেতে বলছে। মনে হয় সামনে নয় পিছনে ফিরে গেলে ভালোহবে অন্তত আজকের রাতটা জন্যে। এদিকে এসব ভাবতে, ভাবতে, হাঁটছে তো হাঁটছে, বেশ জোরে, জোরে কিন্তু পথ তো শেষ হচ্ছে না! বরংচো তার কেনজানি মনে হলো সে একি জায়গাতেই হেঁটে, হেঁটে ফিরে আসছে। অজানা আতংকে ঠোঁটগুলো কাঁপা শুর করলো।চিৎকার দিতে ইচ্ছে হলেও মুখ দিয়ে সেই চিৎকার দেওয়ার মতো শক্তির জোগান হচ্ছে না। কিন্তু এই বার বার এক পথে একি জায়গাতে সে বার বার আসছে কেন? এটার রহস্য কী? এর মানে কী? এমন প্রশ্নের জবাব আপাতত নাই আজগরের কাছে। তবে এতোটুক সে আন্দাজ করেছে সে কোনো অদৃশ্য অশুভের ফাঁদে পড়েছে।তাই সে হারিকেনের আলো আরও বাড়িয়ে দিল।এবং সোজা, একদম নাক বরাবর হাঁটতে শুরু করেছে।তবে পা চলছে না।ইতিপর্বে একি জায়গাতে অধিকবার যেয়ে শক্তি কমে গিয়েছে তার মধ্যে অজানা আতংক! মানসীক চাপ সব মিলিয়ে সে ক্লান্ত! তার মানে এই নয় সে ফিরে গিয়েছে।সবে মাত্র শুরু হলো সেই অদৃশ্য জগতের অশুভ আত্মাদের কর্ম। একটু দূর যেতেই পিছন থেকে প্রচুর কাঁন্নার শব্দ।যখন বাচ্চারা কাঁন্না করে সেই সময় যেমন সেই কাঁন্নার শব্দ শুনা যায়! তেমন নয়।একটু ভিন্ন।পিছন থেকে যে কাঁন্নার শব্দ আসছে সেটা নিশ্চিত বাচ্চাদের কাঁন্না তবে শব্দটা অন্য রকম রহস্যময়।আর কাঁন্নার মাঝে করুণ সুর।যেন সে খুব কষ্টে আছে।খুব কষ্টে। পুরো পরিবেশটা সেই বাচ্চা কাঁন্নার শব্দে থমথমে অবস্থা বিরাজমান। হালকা বাতাসে আবার মৃদু হাসির শব্দও এখন! কী করব! ভাবলো আজগর। মনে, মনে ভীষণ বকা দিতে ইচ্ছে করছে তার বড় ভাই সাইফুদ্দীন কে। সে বলেছিল তুই যা বাজারে আমি একটু পর আসছি। তার আশায়, থেকে আজ এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে আজগরকে। মৃদু হাসির শব্দটা আসার পর বাচ্চাটার কাঁন্না থেমে গেল।আজীব তো? মৃদু হাসির সাথে কাঁন্নার সম্পর্ক কী? তবে সেই মৃদু হাসির মধেও রয়েছে অস্বাভিক রহস্য।পৃথিবীর মানুষ স্বাভিক হাসার যে শব্দ! তার সাথে সামান্যও মিল খুঁজে পাওয়া যায় নি সেই হাসির। ইতিমধ্যে হালকা বাতাসটা জোরালো হচ্ছে ধীরে, ধীরে।বাঁশ ঝাড়ের ফাঁকে মনে হয় কেউ লক্ষ্য রেখেছে আজগর এর দিকে।মনে হয় কোনো একজন পিছনে, পিছনে আসছে তবে তাকে দেখছে না আজগর। ঝোপ ঝাড়ের ভিতরে টুকটাক শব্দ।গ্রামের বিস্তর জমিন থেকে শিয়ালের করুন সুরে কাঁন্নার শব্দ, আর এই মৃত্যুরডাক বাঁশ ঝাড়ের সেই বাচ্চার কাঁন্না আবার মৃদু হাসি যা রহস্যময় এবং মৃদু বাতাস থেকে জোরে জোরে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়া এবং পিছনে পিছনে কেউ আসছে যা তার চোখে দেখা যাচ্ছে না এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ আজগরকে কোনো এক অদৃশ্য কিছু টেনে নিয়ে জঙ্গলে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও সেই অদৃশ্যের কিছুর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছে না আজগর।প্রানপণে চেষ্টা করছে তবে সব বৃথা। চাপা কাঁন্নার শব্দটা বেড়ে গেল আজগরের। জোরে, জোরে চিৎকার দিয়ে জানে শরীরের শক্তি কমা ছাড়া কোনো লাভ হবে না।কারণ সেই চিৎকার কারোকানে যাবেও না।তবে গেলে কেউ আসবেও না।যেহেতু এই মৃত্যুর ডাক বাঁশঝাড় থেকে প্রায় কিছুদিন পর পর চিৎকার করে কাঁন্নার শব্দ কাছেরবাড়ির মানুষগুলো শুনতে পায়। হারিকেনটা ছিটকে পড়ে গিয়েছে, ঝুঁড়িটাওপড়ে গিয়েছে। ঘুটঘুটে অন্ধকার এর মধ্যে টেনে হিছড়ে আজগরকে নিয়ে যাচ্ছে একদম ভিতরের দিকে। লোকে বলে একদম ভিতরে একটু ছোট্ট পুকুর রয়েছে।ইতিপূর্বে দুইজনের মৃত দেহ সেখানে পাওয়া গিয়েছিল।তবে কিভাবেমরেছে। এটা কী খুন! নাকি অন্য কোনো রহস্য তা কেউ জানতে পারেনি আজ অবধি। সেখানেই নিয়ে যাচ্ছে।এতো টানা টানির পর আর ভয়ে আজগর অজ্ঞান হয়ে যায়। কিছুদিন পর খোঁজ মিলে আজগরের। হারিকেনটার কেরোসিন কিছুটাজায়গায় তরলের মতো, আর ঝুঁড়িটা কিছুদূর পড়ে আছে। আর এর ঠিক সামনে বেশ ভিতরে ছোট্ট সেই পুকুরটাতে অর্ধ লাশ ভেসে আছে।

পদস্খলিত ভালোবাসা... এবং কিছু অব্যক্ত কষ্ট

অন্ধকার আজকাল বড্ড ভালো লাগে....অথচ একটা সময় দিনের আলো ছিল আমার ভীষণ প্রিয়। প্রতিদিন নতুন ভোরের অপেক্ষায় থাকতাম আমি ।...একএকটা ভোর কি অদ্ভুত রকম সুন্দর হত তখন! এক একটা ভোর যেন নতুন এক একটা গল্পের শুরু।.. কালে কালে বেশ খানিকটা পথ আজ পেরিয়ে এসেছি।...এখনকার ভোরগুলো আর আগের মতন সুন্দর হয় না, নতুন কোন গল্পের কথাও বলে না.... ভোরগুলো এখন বড্ড বেশি একঘেয়ে, একপেশে!....তাই অন্ধকারই আজ আমার জীবনের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। আমারসব গোপনীয়তার, কান্নার আর দীর্ঘশ্বাসের নীরব সাক্ষী।..... কপট বন্ধুদের চেয়ে যদিও এই বন্ধুই ঢের ভালো।....কোন উপকারে না আসুক, অপকার করার অন্তত কোন অভিপ্রায় নেই তার। হ্যাঁ...আমার জীবন এখন সত্যিকারের বন্ধুহীন। এমনকি বন্ধুত্ব শব্দটাই বড্ড বেশী মিথ্যা আরলোক দেখানো মনে হয় আজকাল। স্বজনদের উপস্থিতিও কদাচিৎ, কালেভদ্রে ঘটে। প্রিয় মানুষ বলতে এই দুনিয়ায় একজনই অবশিষ্ট আছে কেবল। যার মুখের দিকে তাকিয়েই স্বেচ্ছামৃত্যুর বিষ পান করা হয়ে উঠছে না।.. আর একজন প্রিয় মানুষ ছিল...সবার চেয়ে প্রিয়...হয়তো মায়ের চেয়েও...স্বার্থপরের মত শোনাচ্ছে, তাইনা?... জানি। তবু এটাই হয়তো সত্যি! ২৪ ঘন্টা যাকে ঘিরে আমার সময়, স্বপ্ন, ভবিষ্যত, সুখ, আনন্দ, চাওয়া-পাওয়া সব আবর্তিত হত...সেই একজনই আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ছিল! জীবনের গোলমেলে হিসাবের ব্যাপারে আমার কোনকালেই কোন ধারণা ছিল না। এতটাই সহজ সরল ছিল জীবনটা। অথচ যে মানুষটার হাতে পরম বিশ্বাসে জীবনটা নির্ভার ভাবে ছেড়ে দিয়েছিলাম, সে আমাকে ঠকালো! বীভৎস ভাবে ঠকালো। দিনের পর দিন তার বদলে যাওয়া নিষ্ঠুর মারমুখী ব্যবহার, অপমান, ৮ বছরের সবগুলো মুহুর্তের কথা, প্রতিশ্রুতির কথা অকপটে অস্বীকার করা...... এসব কিছু আমাকে জীবনেরসেই অন্ধকার দিকটাকে চিনতে শেখালো যার সম্পর্কে আমরা পূর্ব কোন ধারণাই ছিল না।...এমন সব ভয়াবহ কুৎসিত সব মিথ্যা আর নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হলাম আমি, যে নিষ্ঠুরতা এ জীবন আগে কখনো দেখে নি।.. পরম বিশ্বাসে একদিন যে মানুষটার হাত ধরেছিলাম, যে মানুষটার উপর ভরসা করে দীর্ঘ ৮ টা বছর অপেক্ষা করলাম, কেমন অদ্ভুত ভাবে সে বদলে গেল...। যে স্বপ্নটাকে ছুঁয়ে দেখবো বলে জীবনের চলার পথের সব বাহুল্যগুলো ঝেড়ে ফেলে দিয়েছিলাম, সেই স্বপ্নের দিকে যতই এগিয়ে চাইছিলাম, স্বপ্নটা ততই দূরে সরে যাচ্ছিল...স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গিয়ে একটা সময় খেয়াল করে দেখলাম, যার হাত ধরে ছুটে চলেছি এতটা পথ,সে আমার হাতটা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে...তার জন্য বাহুল্য ভেবে যাদের একটা সময় নিঃসংকোচে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছি, তারাও আজ দৃষ্টিসীমারবাইরে হারিয়ে গেছে... জীবন নামের মহাসমুদ্রে আমি আজ বড্ড একা।...একটা সময় ছিল যখন মনে হত হাবুডুবু খেয়ে হলেও বাঁচি, বেঁচে থাকার চেষ্টা করি।....ঈশ্বরের কাছে প্রতি মুহুর্ত প্রার্থনা করতাম, আমার বিশ্বাস তুমি ভেঙ্গে দিও না! ... ৮ বছরে তিলে তিলে মানুষটার চরিত্রের যে অবয়ব আমি মনের ভেতর তৈরি করে নিয়েছি, যেমন জেনেছি তাকে...সেই বিশ্বাসটা, সেই অবয়বটা তুমি মিথ্যা করে দিও না... ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শোনেন নি! পরম ভালোবাসা, মমতা আর বিশ্বাসে বছরের পর বছর ধরে তৈরি করা অবয়বটা কেবল যেন বদলে গেছে...!!! যেন কেউ এসিড নিয়ে ঝলসে অবয়ব টাকে কুৎসিত করে দিয়ে গেছে।............. এখন আর বেঁচে থাকার চেষ্টা করি না! বিশ্বাস যেখানে এতটা ঠুনকো, মানুষ যেখানে এতটাই পদস্খলিত.... মানুষের বিবেক যেখানে মমির অস্তিত্ব নিয়ে ঠিকে আছে কেবল, সেখানে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থেকে কি লাভ??।... তার চেয়ে বরং জীবনের স্রোত ই আমাকে নিরুদ্দেশে ভাসিয়ে নিয়ে যাক....যাক না...ক্ষতি কি তাতে! জানেন তো, চারপেয়ে জানোয়ার আঘাত করলে গভীর ক্ষত তৈরি হয়, যত্নে তা আবার সেরেও যায়। কিন্তু দো-পেয়ে জানোয়ারেরদাঁতে এতটা বিষ থাকে, এর আঘাতে মৃত্যু অনিবার্য! বলছি তার কথা, যার হাত ধরে মরীচিকার পেছনে কোন দিকে না তাকিয়ে দিনমান এক করে ছুটে চলেছি অনেকগুলো বছর। মনুষ্য জীবনের সবচেয়ে গূরুত্বপূর্ণ সময়গুলো সম্ভবত! যার মুখোশবিহীন কদর্য চেহারাটা আমার দু'চোখের পাতা আজ আর এক করতে দেয় না! যার নিখু্ঁত নিপাট ভালোমানুষীর অভিনয় আমাকে প্রতি মুহুর্ত আমাকে আঘাত করে চলেছে, ভোরের আকাশ, শরতের কাশফুল, বৃষ্টি ভেজা সেঁদো মাটির গন্ধ, কদম ফুল, ঝড় কোন যা কিছুতেএ জীবনে ভালোলাগা কাজ করতো, তার কোন কিছুই আজ আর আমাকে স্পর্শ করেনা! অভিশপ্ত একটা জীবন্মৃতের জীবন কাটাচ্ছি আমি শুধু একজনকে বড্ড বেশি ভালোবেসেছিলাম বলে, বিশ্বাস করেছিলাম বলে!....সত্যিকার ভালোবাসায় এরচেয়ে উত্তম প্রতিদান আর কি হতে পারে বলুন তো!!.... আমার সাজানো গোছানো জীবনটাকে ছিবড়ে খাবলে ক্ষত বিক্ষত, করে দিয়ে নতুন মাংসে মুখ গুজেছে সে আজ!.....সেই মাংস খোঁজায় কোন লজ্জা নেই,দ্বিধা নেই...নেই কোন অপরাধবোধ! দো পেয়ে জানোয়ারেরা আসলে সব পারে...প্রতিশ্রুতি দিতে পারে, ভাঙতেও পারে। মানুষের ভালোবাসা আর আবেগ নিয়ে খেলতে পারে, খেলাতে পারে, স্বপ্ন দেখাতে পারে, ভাঙতেও পারে...একই মন দিয়ে অসংখ্য আমিনা কে ভালোবাসার কথা বলতে পারে, অসংখ্য জীবন নষ্টও করে দিতে পারে..... ...দীর্ঘযাত্রার ক্লান্তি আজ আমায় অনেকটা ধীর করে দিয়েছে! নতুন ভাবে চেনা কুৎসিত অবয়বটার পেছনে আমি এখন আর উন্মাদের মত ছুটে বেড়াই না!... তবে হ্যাঁ, পরম ভালোবাসা আর বিশ্বাসে তার যে অবয়বটা আমি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মনের ভেতর গড়ে তুলেছিলাম, সেই অবয়বটার জন্য দীর্ঘশ্বাস ফেলি আমি...আমারসব হারানোর বেদনা সেই সুন্দর অবয়বটার জন্য...কুৎসিত অবয়বটির জন্য সীমাহীন প্রচন্ড ঘৃণা ছাড়া আর কিচ্ছু অবশিষ্ট নেই আমার ভেতরে !... এখন বেঁচে থাকার চেষ্টা করার চাইতে তাকিয়ে দেখে যাওয়াটাই আমারসহজ মনে হয়... আমি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখি, চিরায়ত সেই নাটকের পটভূমিকা আর চিত্রনাট্য একই রয়ে গেছে। শুধু বদলে গেছে নটী। নটের ভূমিকা সেই আগের মতই আছে..... জীবনে কখনও কোন কিছু নিয়ে আফসোস হয় নি। অথচ আজকাল একটা জিনিস নিয়ে মনের ভেতর প্রায় আক্ষেপ কাজ করে!....একজন নষ্ট মায়ের গর্ভ থেকে কেন জন্ম হলো না আমার..?? তাহলে হয়তো আমিও দোপেয়ে জানোয়ারদের মত খেলতে শিখতাম, স্বপ্ন বেঁচেখাওয়া ব্যাভিচারী হতাম, এক শরীর থেকে আরেক শরীর, এক মন থেকে আরেক মনে মুখ গুঁজে লালসা মেটাতে জানতাম, জানতাম কি করে হত্যা করতে হয় এক একটা জীবন আর এক একটা স্বপ্ন.... শেষ করছি একটা ছোট্ট ঘটনা দিয়ে। আমার কাছের এক ছোট বোন হোস্টেলে থাকে। গতকাল তার হোস্টেলের এক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কারণ চিরায়ত সেই প্রতারণা। প্রতারক প্রেমিকের প্রতারণার কষ্ট আর আঘাত সহ্য করতে পারে নি মেয়েটি। বেঁচে থাকার চাইতে মৃত্যুই তার কাছে সহজ মনে হয়েছে। অনেকেই আত্মহত্যার বিপরীতে কথা বলবে...আত্মহত্যা কাপুরুষের কাজ.... আরোও কত শত মন্তব্য আর অপবাদ রয়েছে আত্মহত্যাকারীর জন্য। কিন্তু একটা মেয়ে যখন কাউকে সত্যি ভালোবাসে সে ভালোবাসা যে কতটা তীব্র হতে পারে, প্রেমিকরূপী জানোয়ারগুলোর তা উপলব্দি করার ক্ষমতা নেই। তাইতো তারা ভালোবাসার নাটক করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নিস্পাপ প্রাণগুলোকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে বাধ্য করে। আর নিজেরা আনন্দ আর ভালোবাসার ফেরি করে চলে এক মন থেকে আরেক মনে, এক শরীর থেকে আরেক শরীরে!... এক বুক কষ্ট, অভিমান আর অপমান নিয়ে যে মেয়েটা পরপারে হারিয়ে গেল, একটা নষ্ট পুরুষের জন্য জীবন যে মেয়েটাকে তার সব পাওনা থেকে বঞ্চিত করলো সেই প্রতারক কুকুরটাকে আইনের আওতায় এনে আত্নহত্যার প্ররোচনা দেয়ার জন্য কেউ তার শাস্তির কথা বলবে না কখনও....আর এই সুযোগেই জানোয়ারগুলো একটার পর একটা মেয়ের জীবন ভালোবাসার নামে নষ্ট করতে থাকবে।... বোকা মেয়ে তুমি সোনালী! একটা সময় তোমার মত ভুল আমিও করতে যাচ্ছিলাম। বিশ্বাস করো, তোমার মৃত্যুতোমার ভন্ড প্রেমিকের পুরুষালি লালসা এতটুকুও কমাবে না, আরেকটা মেয়ের শরীরে একই ভাবে কামড় বসানোর সময় তার এতটুকুও দ্বিধা হবে না,পুরুষাঙ্গ টা এতটুকুও কাঁপবে না তার.... !! অসৎ চরিত্রের এই পুরুষগুলোর জন্মই হয়েছে কুকুরের বীর্য থেকে। এদের ভেতর তাই নূন্যতম নৈতিকতা বোধও অনুপুস্থিত। এদের কাছে ঈশ্বর নেই, পাপ-পূণ্য, মৃত্যু বা পরকালের জবাবদিহিতার ভয় নেই। তাই এরা অবলীলায় শুধুমাত্র নিজেদের কামনা বাসনাকে চরিতার্থ করতে ঈশ্বরের নামে, এমন কি কুরআন ছুঁয়েও মিথ্যা শপথ করতে পারে। সমাজটার প্রতিনিধিত্ব এই মানুষরূপী জানোয়ারগুলোয় করছে। সমাজই এই জানোয়ারগুলোর সবচেয়ে বড় ঢাল। তুমি আত্মহত্যাকারী নও, তোমাকে আত্মহত্যা করতে তোমার প্রতারক প্রেমিক বাধ্য করেছে, এই সত্যিটা এইকুকুরশাসিত সমাজ কখনো মেনে নেবে না। তাই ভালোবাসার কথা বলে তোমার জীবন নষ্ট করার দুঃসাহস যে কুকুরটা দেখিয়েছে, তাকে শাস্তি দিতেই তোমাকে বেঁচে থাকতে হত!... শাস্তি ওদের অবশ্যই প্রাপ্য। তা নইলে এই সব কুকুরগুলোর ভ্রণ থেকে ভবিষ্যতে আরো অসংখ্য নষ্ট পচে যাওয়া সত্ত্বা জন্ম নেবে .....অসংখ্য শ্ব-দন্ত জানোয়ার বাধ্য করবে অসংখ্য আমিনা বা সোনালীদের আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে........শাস্তি তোমাকেই দিতে হত সোনালী। অথচ তুমি মরে গেলে....তুমি মরে গিয়ে আবারও প্রমাণ করে দিয়ে গেলে 'মানুষ হয়ে জন্মানোতে কলি যুগে কোন সার্থকতা নেই। এ যুগ নষ্ট ভ্রণ থেকে জন্ম নেয়া দোপেয়ে জানোয়ারদের যুগ!'