Sunday, July 8, 2018

ইসলামিক গল্প (কবরের আযাব)

islamic golpo

কবরের_আযাব– নবীজি সাঃ অনেকগুলো কবর দেখলেন । খুশী হলেন । শেষমেশ একটা কবরের সামনে গেলেন। উনার চেহারা মুবারকে ঘাম দেখা দিল। তিনি অস্হির হয়ে পড়লেন। দুঃচিন্তায় চেহারা কালো হয়ে উঠল। হয়রান পেরেশান হয়ে গেলেন তিনি। একজন সাহাবী (রাঃ) উনার অবস্হা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এত পেরেশান কেন ? ‘হায়, হায়’ ! তিনি অস্হির হয়ে বললেন, ‘এই কবরের বাসিন্দার উপর ভয়ানক আযাব হচ্ছে । এমনই শাস্তি যা ভাষায় বলা যায় না । আহা ! এই ব্যক্তির কি উপায় ?’ বলে তিনি কবরে হাত মুবারক রেখে দোয়া করলেন ।কিন্তু চেহারায় প্রশান্তি এলো না । তিনি বললেন, ‘দোয়া কবুল হচ্ছে না । কোন রহস্যময় কারণে । সাংঘাতিক বড় পাপ করেছে সে ।’ হুজুর (সাঃ) এর উপর অস্হিরতা বেড়েই চললো । তিনি বললেন, ‘ আমার উম্মতের উপর এমন কঠিন শাস্তি হচ্ছে আর আমি বাড়ী গিয়ে ঘুমাবো ? তিনি একজন সাথীকে ডেকে বললেন, ‘যাও, মদীনার বাজারে । সেখানে আওয়াজ দিয়ে ডাকোযাদের আত্নীয়ের কবর এখানে রয়েছে । ‘ তারা এলো । তাদেরকে নিজ নিজ আত্নীয়ের কবরে দাড়াতে বললেন । সবাই দাড়ালো । কিন্তু আশ্চর্য্য ! ওই কবরের পাশে কেউ দাড়ালো না । বেদনায় নীল হয়ে গেলেন হুজুর (সাঃ)। অনেক পরে এলো এক বুড়ি । ধীর পায়ে । লাঠিতে ভর দিয়ে । তিনি দাড়ালেন সেই কবরের পাশে । হুজুরের পাক (সাঃ) স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন । তারপর বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এটা কার কবর ?’ ‘আমার ছেলের ।’ বৃদ্ধা বললেন । ‘আপনার ছেলের কবরে ভয়ানক শাস্তি হচ্ছে ।’‘ইয়া রাসূলূল্লাহ ! এটা কি সত্যি ?’ ‘সত্যিই ‘ । ‘শুনে আমি খুব খূশী হলাম ।’ ‘আল্লাহ মাফ করুন ! আপনি এ কি বলছেন মা ?’ সে আপনারসন্তান !’ শুনুন তাহলে, হে আল্লাহর রসূল ! এই বাচ্চা যখন আমার পেটে তখন তার বাবা মারা যায় । সে পৃথিবীর মুখ দেখল । তার কেউ ছিলোনা । আমি নিদারুণ কষ্ট করে তাকে বড় করে তুললাম । তিল তিল করে । সেবিয়ে করল । স্ত্রীকে পেয়ে সে ভূলে গেল আমাকে । একদিন তার ভালোবাসার বউ কানে কানে কি যেন বলল । ছেলে রাগে অধীর হয়ে মারতে শুরু করল আমাকে । ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেলাম আমি । জ্ঞান হারালাম । হুশ ফিরলে আমি প্রার্থনা করলাম , প্রভুর দরবারে । দু’হাত তুলে । বললাম, ‘হে আল্লাহ ! তাকে কবরে শাস্তি দাও । অনন্ত কাল ধরে । দুনিয়াতে দিওনা । চোখের সামনে ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারব না । ‘ ‘হে আল্লাহর রাসূল ! আমি এখন এজন্য খূশী যে আমার দোয়া কবূল হয়েছে । ‘ হুজুর (সাঃ) অত্যাচারিতা সরল প্রাণ এই বৃদ্ধার কথা শুনে চোখের পানি চেপে রাখতে পারলেন না । উনার মুক্তার মতো অশ্রু , গাল বেয়ে ফোটায় ফোটায় পড়তে লাগল । খানিকপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, ‘হে বৃদ্ধা মা ! তুমি তোমার ছেলেকে ক্ষমা করো । সে ভয়াবহ শাস্তি পাচ্ছে । ‘ বৃদ্ধা বললেন, ‘হে রাসূলূল্লাহ ! অন্য কিছু বলুন । ছেলেকে ক্ষমা করব না আমি ।’ নিরুপায় হয়ে হুজুর (সাঃ) আকাশের দিকেমূখ তূললেন । কাতর স্বরে বললেন, ‘হে আল্লাহ ! এই বৃদ্ধাকে কবরের শাস্তি দেখাও ।’ চোখের পলকে ঘটনা ঘটল । বৃদ্ধার চোখ বিস্ফোরিত হলো। সে প্রাণ ফাটা চিৎকার করে বেহুশ হয়ে গেল । খানিক পর ।জ্ঞান ফিরলবৃদ্ধার । থর থর করে কাপছেন তিনি । তীর খাওয়া কবুতরের মত । তিনি বললেন, ‘ওগো খোদা ! কবরের আযাব কি এমন ভীষণ ! এমন ভয়ানক ! ছেলের পুরো শরীর থেকে চামড়া উঠিয়ে নেয়া হয়েছে । তাকে মুগুর পেটা করা হচ্ছে । হে আল্লাহর রাসূল ! আমি তাকে ক্ষমা করলাম । আপনি দোয়া করুন । সে যেন মুক্তি পায় । ‘ হুজুর (সাঃ) হাত উঠালেন । দোয়া শেষ। উনার চেহারা উজ্জ্বল । প্রকৃতিতে, আকাশে বাতাসে নেমে এল সুমহান সমাহিত পরিবেশ ।


1 comment:

  1. ইসলাম নিয়ে গল্প অনলাইনে পাওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার। আপনাকে ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই। আপনার ইসলামিক লেখা অব্যহত থাকুক হাজার বছর এটাই কামনা। সুন্দর সুন্দর লেখা আরও অনেক চাই। আল্লাহ আপনার এবং আপনার পরিবারের মঙ্গল করুন। আমিন

    ReplyDelete